কলেজে ক্লাস শুরুর প্রথমে দিনেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠী-সংঘর্ষের জেরে বন্ধ ছিল পঠনপাঠন। আর দ্বিতীয় দিন ক্লাস চলল পুলিশি ঘেরাটোপে। শুক্রবার এমন অভিজ্ঞতাই হল পূর্ব মেদিনীপুরের মহারাজা নন্দকুমার মহাবিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের।
বৃহস্পতিবারের গোলমালের জেরে শুক্রবার সকাল থেকেই কলেজের প্রবেশপথ থেকেই ছিল নজরদারির কড়াকড়ি। কলেজের ভিতরে বহিরাগতদের ঢোকা বন্ধ করতে প্রবেশপথের ভিতরেই নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছিল। রাখা হয়েছিল একটি ভিজিটর বুকও। কলেজের ভিতরে যাওয়ার জন্য নিরাপত্তারক্ষীর জিজ্ঞাসাবাদের পর ওই ভিজিটর বুকে নাম, ঠিকানা ও কাজের খতিয়ান দিলে তবেই মিলছিল কলেজে ঢোকার ছাড়পত্র। আর কলেজের চত্বরে ছিল পুলিশ বাহিনি। শুক্রবার সকাল সোয়া ১০ টা নাগাদ হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে ওই কলেজে গিয়ে দেখা যায় প্রবেশ পথের ভিতরে কলেজের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী কলেজে আসা ছাত্র-ছাত্রীদের জিজ্ঞাসা করার পরেই ভিতরে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে। কলেজের ভিতর চত্বরে মোতায়নে রয়েছে পাঁচজন পুলিশ কর্মী।
কলেজে প্রথম দিন পা রেখেই শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের (টিএমসিপি) দুই গোষ্ঠীর মারপিট দেখেছিল এই কলেজের নবাগত পড়ুয়ারা। বৃহস্পতিবার প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরুর আগে নবাগত শ’পাঁচেক পড়ুয়াকে নিয়ে এক অনুষ্ঠান করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ছাত্র সংসদ। তারপরে শুরু হয় ক্লাস। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ প্রথম বর্ষের ক্লাসে ক্লাসে গিয়ে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক চন্দন দাস, সভাপতি উত্তম ভক্তা-সহ জনাকয়েক পদাধিকারী ছাপানো রুটিন বিলি করছিলেন। রুটিনের উল্টো পিঠে নানা দাবি-দাওয়ার সঙ্গে ছাপা ছিল সংগঠনের কলেজ শাখার সভাপতি তাপস দাসের নাম। তাপস কলেজের ছাত্র নন, তা হলে কেন ছাত্র সংসদের তরফে বিলি করা রুটিনে তাঁর নাম থাকবেএই প্রশ্ন তুলে সংসদেরই একাংশ প্রতিবাদ জানান। ছাত্র সংসদের সাংস্কৃতিক সহ-সম্পাদক শেখ সাদ্দাম হোসেন, সহ-সভাপতি সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়েরা ছিলেন প্রতিবাদী-শিবিরে। এর জেরে কলেজ চত্বরেই টিএমসিপি-র দু’পক্ষের হাতাহাতি হয়। দু’পক্ষের জনা ছয়েক জখম হন। এর পরই কলেজ ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ। টিচার-ইন-চার্জ প্রদ্যোৎকুমার দাস বলেছিলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ক্লাস হবে। শুক্রবার পুলিশি মোতায়েন করে নতুন বর্ষের ক্লাস শুরু হল।