প্রহৃত বিজেপি নেতা অরুণ ভুঁইয়া। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।
দল ছাড়ার হুমকি দিয়ে ফের এক বিজেপি নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না থানার রায়চক গ্রামে। মারধরে জখম বিজেপির অঞ্চল সভাপতি অরুণ ভুঁইয়াকে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এই ঘটনায় তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য-সহ দলের ৬ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ময়না থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন অরুণবাবুর স্ত্রী। জেলা পুলিশ সুপার সুকেশকুমার জৈন বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
ময়নার রায়চক গ্রামের বাসিন্দা অরুণবাবু দীর্ঘদিন ধরে বিজেপি করছেন। বর্তমানে তিনি দলের রামচক অঞ্চল সভাপতি পদে রয়েছেন। অভিযোগ, বেশ কিছু দিন ধরেই স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা বিজেপি ছাড়ার জন্য অরুণবাবুকে চাপ দিচ্ছিল। তিনি রাজি হননি। তার জেরেই এ দিনের মারধর বলে অভিযোগ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ৭টা নাগাদ বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে গ্রামের চা দোকানে গিয়েছলেন অরুণবাবু। সেখানে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন বিজেপির গোজিনা অঞ্চল সভাপতি সুকুমার দাস। অরুণবাবু ও সুকুমারবাবু দোকানের সামনে বেঞ্চে বসে চা খাওয়ার সময়ই স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য লক্ষ্মণ মিস্ত্রির নেতৃত্বে জনা দশেক তৃণমূল কর্মী-সমর্থক তাঁদের উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। কোনওরকমে পালিয়ে যান সুকুমারবাবু। আর অরুণবাবুকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। পরে গ্রামবাসীরা আহত অরুণবাবুকে উদ্ধার করে ময়না ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। পরে তাঁকে তমলুক জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
তমলুক হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে বছর চল্লিশের অরুণবাবু বলেন, “গত ১০ বছর ধরে সক্রিয় ভাবে বিজেপি করছি। কিছু দিন হল এলাকার তৃণমূল কর্মীরা হুমকি দিচ্ছিল, এখানে কোনও ভাবেই বিজেপি করা চলবে না। আমি রাজি হইনি বলেই এ দিনের হামলা।” অরুণবাবুর ভাই শ্রীকান্ত ভুঁইয়ার অভিযোগ, “আমরা দাদাকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিয়ে যাওয়ার সময়ও তৃণমূলের লোকজন বাধা দেয়। পরে পুলিশের সাহায্যে দাদাকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসি।”
ঘটনার খবর পেয়ে এ দিন ময়নায় গিয়েছিলেন বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক সুকুমার-দাস দলের জেলা নেতারা। পরে সুকুমারবাবু বলেন, “লোকসভা নির্বাচনের পর জেলায় আমাদের সংগঠনের শক্তি বৃদ্ধি হচ্ছে দেখে তৃণমূল আতঙ্কিত। তাই এ ভাবে হামলা চালাচ্ছে।” তৃণমূল অবশ্য মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দলের ময়না ব্লক কার্যকরী সভাপতি সুব্রত মালাকারের পাল্টা অভিযোগ, চা দোকানে বসে তৃণমূলের নামে কুৎসা করছিলেন অরুণবাবু। দলীয় কর্মীরা তা শুনে পেয়ে প্রতিবাদ করে। সুব্রতবাবুর কথায়, “ওই সময় ধস্তাধস্তি হয়। তবে মারধরের অভিযোগ মিথ্যা।”