পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রচার-দলে মহিলা এবং বয়স্কদের সামিল করতে তৎপর হল সিপিএম। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর শহরের স্পোর্টস কমপ্লেক্সে দলের কর্মিসভায় শহরের বিভিন্ন বুথের কর্মীরা যোগ দেন। উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বিজয় পাল, শহর জোনাল সম্পাদক কীর্তি দে বক্সী প্রমুখ। দলীয় সূত্রে খবর, সভা থেকে প্রতি বুথে মহিলা এবং বয়স্ক কর্মীদের নিয়ে দল গড়ার নির্দেশ দেন নেতৃত্ব। তাঁরা জানান, ছাত্র-যুবরা তো রয়েছেই, সেই সঙ্গে বাড়ি বাড়ি প্রচারে মহিলা এবং বয়স্ক কর্মীদেরও সামিল করতে হবে। মানুষের কাছে দলের বার্তা আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলতেই সিপিএমের এই উদ্যোগ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
মেদিনীপুর শহরে সিপিএম এখন ক্ষয়িষ্ণু। দলেরই এক সূত্রে খবর, এ বার বহু কর্মীর সদস্যপদ পুনর্নবীকরণ হয়নি। সংখ্যাটা প্রায় দু’শোর কাছাকাছি। এঁদের অধিকাংশই নিজে থেকে সদস্যপদ পুনর্নবীকরণ করানোর ক্ষেত্রে আগ্রহ দেখাননি। পরিবতিত পরিস্থিতিতে দলও তাঁদের জোরাজুরি করেনি। একাংশকে অবশ্য দলের থেকেই সদস্যপদ পুনর্নবীকরণ করতে দেওয়া হয়নি। এঁদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শহরে দলের একাধিক শাখা অফিসও তুলে দিতে হয়েছে। কোথাও দু’টি শাখা মিলে একটি শাখা হয়েছে। কোথাও তিনটি শাখা মিলে দু’টি শাখা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে লোকসভা নির্বাচনের আগে রীতিমতো চাপে রয়েছে সিপিএম।
বৃহস্পতিবারের সভায় দলীয় নেতৃত্ব জানান, আপাতত ১০ শতাংশ ভোট- বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে এগোতে হবে। শহরে ফ্রন্টের পক্ষে ৩৫-৩৬ শতাংশ ভোট এলেই দল আবার ঘুরে দাঁড়াবে। দলীয় সূত্রে খবর, কর্মিসভায় নিবিড় জনসংযোগ গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছেন দীপকবাবু। তাঁর বার্তা, ‘‘আমাদের প্রতিটি পরিবারে যেতে হবে। প্রত্যেক ভোটারের সঙ্গে কথা বলতে হবে। নিবিড় প্রচার করতে হবে। আমরা জানি, আক্রমণ কমবে না। চক্রান্ত আরও বাড়বে। তবে, জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদের মধ্য দিয়েই এই পরিস্থিতির পরিবর্তন সম্ভব।” যে মানুষ দলের সমর্থক ছিলেন, তাঁদের ফেরানোর পাশাপাশি যে মানুষ ভুল বুঝে দূরে সরে গিয়েছিলেন, তাঁদের কাছে যাওয়ারও পরামর্শ দেন দীপকবাবু। সিপিএমের জেলা সম্পাদকের মতে, নতুন করে মানুষের মধ্যে উৎসাহ সৃষ্টি করতে হবে। তবে, কোনও ভাবেই আত্মসন্তুষ্টির শিকার হওয়া যাবে না।