পাকা রাস্তার আর্জি, মাথা নাড়লেন ‘তারকা’ দেব

পিচ বোর্ডে লাল কালিতে লেখা: দাদা, পাকা রাস্তা চাই! সঙ্গে সঙ্গে তারকা প্রার্থীর চটজলদি উত্তর-নিশ্চয়ই হবে। রোড-শোতে সকলে যখন তারকা প্রার্থীকে কাছে পেয়ে উদ্বেলিত। তখন দাসপুরের জয়কৃষ্ণপুরের মানুষ তারকা প্রার্থীকে কাছে পেয়ে নিজেদের আর্জির কথা জানাল। আর রোড-শোতে সকলের সমস্যা, অভিযোগের কথা শুনে সমাধানের আশ্বাসও দিলেন ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী দীপক অধিকারী ওরফে দেব।

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

দাসপুর শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৪ ০২:১১
Share:

বৃহস্পতিবার রোড-শোতে তেষ্টা মেটাতে দেবকে ডাব এগিয়ে দিচ্ছেন এক অনুরাগী। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

পিচ বোর্ডে লাল কালিতে লেখা: দাদা, পাকা রাস্তা চাই!

Advertisement

সঙ্গে সঙ্গে তারকা প্রার্থীর চটজলদি উত্তর-নিশ্চয়ই হবে।

রোড-শোতে সকলে যখন তারকা প্রার্থীকে কাছে পেয়ে উদ্বেলিত। তখন দাসপুরের জয়কৃষ্ণপুরের মানুষ তারকা প্রার্থীকে কাছে পেয়ে নিজেদের আর্জির কথা জানাল। আর রোড-শোতে সকলের সমস্যা, অভিযোগের কথা শুনে সমাধানের আশ্বাসও দিলেন ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী দীপক অধিকারী ওরফে দেব।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকাল দশটা নাগাদ দাসপুরের ধানখাল থেকে শুরু হয় দেবের রোড শো। রোড-শোতে এ দিন দেবের সঙ্গে ছিলেন বাবা গুরুপদ অধিকারী ও মামা নারায়ণ মুখোপাধ্যায়। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই, মমতা ভুঁইয়া, শ্যাম পাত্র, সুকুমার পাত্র, সুনীল ভৌমিক-সহ স্থানীয় নেতৃত্বরা। বুধবার ডেবরার প্রচার সেরে ঘাটালের কুশপাতায় তাঁর জন্য ভাড়া করা বাড়িতেই রাত কাটান দেব। বৃহস্পতিবার সকালে ঘাটাল থেকে দাসপুরে আসেন দেব।

রোড-শোর পথেই সড়বেড়িয়া হাইস্কুলের পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন দেব। তাঁদের কাছে পড়াশোনা কেমন চলছে বলেও জানতে চান। এ দিন চেচুয়াহাটে শহিদ বেদিতে মালা দেন দেব। উল্লেখ্য, ১৯২৩ সালের ৬ জুন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে ‘ভোলা দারোগা’র নেতৃত্বে ব্রিটিশ পুলিশের গুলিতে ওই গ্রামের ১৪ জন গ্রামবাসী মারা যান। ব্রিটিশদের গুলিতে নিহতদের শ্রদ্ধা জানাতে গ্রামবাসীরা একটি শহিদ বেদি গড়ে তোলেন। দলীয় নেতৃত্বের কাছে ওই ঘটনার কথা শুনে চেচুয়াহাটে ভিড়ের মধ্যেই এ দিন দেব গাড়ি থেকে নেমে গিয়ে শহিদ বেদিতে মাল্যদান করেন।

রোড-শো চলাকালীন রাস্তার দু’ধারে ধান ও সব্জি খেত দেখে দলীয় নেতাদের কাছে দেব এলাকায় সব্জি চাষে জল সরবরাহের সমস্যা রয়েছে কীনা সে সম্পর্কে জানতে চান। শঙ্করবাবু দেবকে জানান, এই এলাকায় একাধিক নদী রয়েছে। বোরো বাঁধ দেওয়া হয়। সেই জলেই ধান থেকে সব্জি সব চাষই হয়ে যায়।

দেবের রোড-শোর কথা আগে থেকেই ছড়িয়ে পড়েছিল। তাই গরমকে উপেক্ষা করেই এ দিন সকাল থেকই দাসপুরে রাস্তার দু’ধারে ‘খোকাবাবু’কে কাছ থেকে দেখার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন আট থেকে আশি। টলিউডের হার্টথ্রব দেবকে দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন মহিলারাও। ভিড় কাটিয়ে রোড-শো এগিয়ে নিয়ে যেতে পুলিশের যখন নাজেহাল অবস্থা, তখন দেব নিজেই জনতার উদ্দেশে বলেন, “আপনারা দয়া করে রাস্তা থেকে সরে যান। দেখবেন, কোনও অঘটন যেন না ঘটে। আমি আবার আসব।” এ দিন দেবের রোড-শো ধানখাল থেকে গোবিন্দপুর, অভিরামপুর, জগন্নাথবাটি, জয়কৃষ্ণপুর, চেচুয়াহাট, গোবিন্দনগর, বারাসত-সহ প্রায় দশ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা সময় লেগে যায়।

প্রচণ্ড ভিড় ও চড়া রোদেও যখন ‘অটোগ্রাফ’ বিলিয়ে ভক্তদের আবদার মেটাচ্ছেন তারকা প্রার্থী, তখন খোকাবাবুর ক্লান্তি কাটাতে ভিড়ের মধ্যে থেকেই কেউ নিয়ে এলেন ডাব, তো কেউ ঠান্ডা পানীয়। গৌরায় এসে দেব হুড খোলা গাড়ি থেকে নেমে নিজের গাড়িতে উঠে পড়েন। সেখান থেকে তিনি খুকুরদহতে চলে যান। খুকুড়দহ থেকে ঘাটাল-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়ক ধরে ফের রোড-শো শুরু করেন তৃণমূল প্রার্থী। গৌরা, সোনামুই, বৈকুন্ঠপুর হয়ে দাসপুরের পীরতলায় রোড-শো শেষ হয়। দেবকে দেখতে স্কুল থেকে বেরিয়ে আসে বগুড়া-সোনামুই স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও। দুপুর দেড়টায় প্রথম পর্যায়ের রোড-শো শেষ করে ঘাটালে ফিরে যান দেব। সেখানেই একটু জিরিয়ে নিয়ে ফের বিকেল চারটে নাগাদ শুরু হয় পরিক্রমা। দ্বিতীয় পর্যায়ে দেব সাগরপুর, অস্থল, রাজনগর হয়ে নাড়াজোল পৌঁছন দেব। নাড়াজোলে আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী আফরিন আলির সমর্থনে দেব একটি সভা করেন। সভায় দুর্নীতিমুক্ত সরকার গড়তে তৃণমূলের সমস্ত প্রার্থীদের ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার আবেদন জানান দেব। দেব বলেন, “আমার ভোটে দাঁড়ানোর মূল লক্ষ্য হল, ভোট প্রক্রিয়ায় যুব সমাজের অংশগ্রহণ বাড়ানো।” এ দিন রাতে দেব ঘাটালে ফিরে যান। আজ, শুক্রবার দাসপুর ২ ব্লকে প্রচার করবেন দেব।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement