নন্দীগ্রামের সেই জখম কিশোরীর মৃত্যু হল কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। গত ২৯ জুন সন্ধ্যায় নন্দীগ্রামের ডিজামতলা গ্রামে নিজের বাড়ি থেকেই অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া মৌলি জানাকে আহত ও অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে প্রতিবেশিরাই স্থানীয় রেয়াপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করায়। পরে তাকে তমলুক জেলা হাসপাতাল ও নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়েছিল। পরিবারের তরফে নন্দীগ্রাম থানায় অভিযোগ জানিয়ে ঘটনার তদন্ত দাবি করা হয়েছিল। ঘটনার দশ দিন পার হলেও, এখনও অন্ধকারে পুলিশ। কী ভাবে আহত হল মৌলিতা নিয়ে ধন্দে রয়েছেন মৌলির পরিজন, প্রতিবেশীরাও।
উদ্ধার হওয়ার পর থেকেই মৌলি আহত ও অচৈতন্য অবস্থায় থাকায় তার জবানবন্দী নেওয়া যায়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর পুলিশ সুপার সুকেশকুমার জৈন বলেন, “ওই কিশোরীকে আহত ও অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধারের পরে খুনের চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিশোরীর মৃত্যু হওয়ায় খুনের মামলা রুজু করা হবে। ঘটনায় জড়িতকে চিহ্নিত করতে তদন্ত চালানো হচ্ছে।”
কী হয়েছিল সে দিন? পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিজামতলা গ্রামের বাসিন্দা ওই কিশোরীর বাবা কর্মসূত্রে কেরালায় থাকেন। বাড়িতে মা, বোন ও দাদুর সঙ্গে থাকত ওই কিশোরী। গত ২৯ জুন বিকেলে মৌলির-মা চণ্ডীপুরে গিয়েছিলেন। বোন এক আত্মীয়ের সঙ্গে রথের মেলায় গিয়েছিল। আর, দাদু বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে দোকানে গিয়েছিলেন। পরিবার সূত্রে খবর, মৌলি তখন বাড়িতে একাই ছিল। মেয়ে কী করছে, তা জানতে মৌলির-মা সন্ধ্যায় বাড়িতে ফোন করেছিলেন। মৌলি ফোন না ধরায় এক প্রতিবেশীকে ফের ফোন করে মেয়ে কোথায় আছে, তা দেখে জানাতে বলেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই প্রতিবেশী গিয়ে দেখেন ঘরের মধ্যেই আহত ও অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছে মৌলি।
এরপরে প্রতিবেশীরাই মৌলিকে উদ্ধার করে রেয়াপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করায়। মৌলির দাদু সুনীল জানা নন্দীগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ইতিমধ্যে আহত মৌলিকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। প্রায় এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পরে সোমবার বিকেলে ওই কিশোরীর মৃত্যু হয়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পরিবারের উপর বা ওই ব্যক্তিগত কোনও আক্রোশে ওই কিশোরীকে খুনের চেষ্টা করা হয়েছিল। ওই আক্রমণের কারা যুক্ত, তা জানতে ক’য়েক জনকে চিহ্নিত করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।