মণিকার সঙ্গে অতিরিক্ত জেলাশাসক। নিজস্ব চিত্র।
এক ফসলি জমির ধান বিক্রি করে ব্যাঙ্ককে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপের তিরন্দাজি বিভাগে যোগ দেবে নয়াগ্রামের মণিকা। ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রামের বড়খাগড়ি জনকল্যাণ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া মণিকা সরেন দিল্লির ক্যাম্পে যোগ দিতে রওনা হবে আজ, মঙ্গলবার।
আর্থিক অনটনের মধ্যেও গত আড়াই বছর ধরে কলকাতার সাইতে শাশ্বতী গঙ্গাধর এর কাছে অনুশীলন করছে মণিকা। দিল্লি রওনা হওয়ার আগে মণিকা মঙ্গলবার বলেন, “আমাদের দেড় বিঘা জমি রয়েছে। একবার মাত্র চাষ হয়। তা দিয়ে সংসার চালানোই দায়! বাবা দিনমজুরের কাজ করেন। দাদা কলেজে পড়ে। খুব কষ্টে দিন চলে।” তাঁর কথায়, “অনুশীলনের জন্য আধুনিক নানা জিনিস প্রয়োজন। কিন্তু, সে সব কেনার সামর্থ কই? বাবা ধান বিক্রি করে কিছু টাকা দিয়েছেন, তাই নিয়েই দিল্লি যাচ্ছি।”
ধান বিক্রির টাকা ছাড়া শিক্ষকদের কিছু সাহায্য আর মনের জোর মণিকার পুঁজি। মণিকার কথা জেনে অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) সুশান্ত চক্রবর্তী বলেন, “এশিয়াড থেকে ফিরে ভাল অনুশীলনের জন্য কী কী লাগবে মণিকাকে তার তালিকা দিতে বলেছি। যতটা পারি চেষ্টা করব।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের শারীরশিক্ষা ও যুব কল্যাণ আধিকারিক অভিজিৎ রুদ্র জানালেন, ২০০৯ সালে নয়াগ্রামে বিভিন্ন স্কুলের ছেলেমেয়েদের নিয়ে খেলাধুলোর ক্যাম্পে অনেকের মধ্যে মণিকা আমাদের নজরে আসে। তিনি বলেন, “ও নিজের যোগ্যতাতেই এশিয়া কাপে সুযোগ পেয়েছে।” স্কুলের শিক্ষক সৌমিত্র বিশ্বাস, ইলা মান্না জানালেন, গত বছর হায়দ্রাবাদে অনুষ্ঠিত অল ইন্ডিয়া জুনিয়র ওপেন ন্যাশনাল মিটে ৭০ মিটারের অলিম্পিক রাউন্ডে দ্বিতীয় হয়ে রূপো জেতে মণিকা। এ বছর গুয়াহাটিতে ন্যাশনাল স্কুল মিটে পেয়েছে রূপো ও ব্রোঞ্জ। সকলের আশা মণিকা এশিয়া কাপে ভাল ফলই করবে।