দু’হাজার হেক্টর জমিতে ডাল চাষ, খুশি কৃষিজীবীরা

জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা মিশনের (ডাল শস্য) আওতায় এ বার পূর্ব মেদিনীপুরের ২ হাজার হেক্টর জমিতে ডাল শস্যের ‘প্রদর্শনী ক্ষেত্র’ তৈরি করছে কৃষি দফতর। জেলার তমলুক, পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, মহিষাদল, সুতাহাটা, হলদিয়া, নন্দীগ্রাম ১ ও ২ ব্লক, কাঁথি ১ ও ৩ ব্লক, রামনগর ১ ব্লক, খেজুরি ১ ও ২ ব্লক এবং ভগবানপুর ১ ব্লক-সহ ১৪টি ব্লকে ওই ২০টি প্রদর্শনী ক্ষেত্র করা হবে বলে জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর। আর এমন ঘোষণায় খুশি জেলার কৃষিজীবীরা।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

হলদিয়া শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:২২
Share:

জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা মিশনের (ডাল শস্য) আওতায় এ বার পূর্ব মেদিনীপুরের ২ হাজার হেক্টর জমিতে ডাল শস্যের ‘প্রদর্শনী ক্ষেত্র’ তৈরি করছে কৃষি দফতর। জেলার তমলুক, পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, মহিষাদল, সুতাহাটা, হলদিয়া, নন্দীগ্রাম ১ ও ২ ব্লক, কাঁথি ১ ও ৩ ব্লক, রামনগর ১ ব্লক, খেজুরি ১ ও ২ ব্লক এবং ভগবানপুর ১ ব্লক-সহ ১৪টি ব্লকে ওই ২০টি প্রদর্শনী ক্ষেত্র করা হবে বলে জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর। আর এমন ঘোষণায় খুশি জেলার কৃষিজীবীরা।

Advertisement

পূর্ব মেদিনীপুরের কৃষি দফতরের উপ অধিকর্তা (প্রশাসন) প্রণবেশ বেরা বলেন, “খেসারি, মুগ এবং মসুর ডাল চাষ করা হবে। খেসারি এবং মুসুর ইতিমধ্যেই বিলি করা হয়েছে। মুগের বীজ আসলেই বিলি শুরু হবে।”

কৃষি দফতরের এমন ‘প্রদর্শনী ক্ষেত্র’-এর তোড়জোড় চলছে শুনে মহিষাদলের কেশবপুর জালপাই গ্রামের কৃষিজীবী শেখ হাফিজুদ্দিন, নিশিকান্ত মাইতি, নারায়ণ চন্দ্র দাসেরা বলছেন, এলাকায় জল সেচের সুবিধা না থাকায় শুধুমাত্র বর্ষাকালে আমন ধান চাষ হয়। উপরি হিসাবে ধান জমিতে তাঁরা বরাবরই খেসারি চাষ করেন। ধান কাটার কিছু দিন আগে জমিতে খেসারি বীজ ফেলা হয়। খেসারি বিক্রির সমস্যাও নেই। বিঘা পিছু চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা লাভ হয়। এলাকায় বেশ কয়েক’টি আড়ত রয়েছে। তাঁরা সেখানে খেসারি বিক্রি করেন। সরকারি ভাবে ডাল শষ্য কিনতে সরকার উদ্যোগী হলে আরও ভাল হবে মনে করেন তাঁরা।

Advertisement

একই সঙ্গে তাঁরা বলছেন, আরও আগে কৃষি দফতর থেকে উন্নত মানের খেসারি বীজ, সার দিলে ভাল হত। তাঁরা অবশ্য ইতিমধ্যেই বীজ পেয়ে জমিতে বোনা শুরু করে দিয়েছেন। ফসল ঘরে উঠলে কৃষিজীবীরা বলতে পারবেন সরকারি বীজ সার কেমন, মত তাঁদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, গেল বছর সরকারি সহায়তায় ধান চাষ করেছিলেন। ধান বীজ, সার পেলেও ডেসিমল প্রতি ১২ টাকা হারে যে ইনসেনটিভ পাওয়ার কথা ছিল, তা আজও মেলেনি! কেন? জেলার উপ কৃষি অধিকর্তার জবাব, কেন্দ্র থেকে টাকা এলেই তা চাষিদের দেওয়া হবে।

মহিষাদল ব্লকের সহ-কৃষি অধিকর্তা মৃণালকান্তি বেরা জানান, অনেক আগেই মহিষাদলের ইটামগরা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কেশবপুর জালপাই মৌজার ৮০০ কৃষিজীবীকে খেসারি বীজ, সার, রাসয়নিক ছত্রাক নাশক বিনা পয়সায় দেওয়া হয়েছে। ইটামগরা ১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কাঞ্চনপুর জালপাই এলাকার কৃষিজীবীদেরও খেসারি বীজ, সার, রাসায়নিক ছত্রাক নাশক দেওয়া হয়েছে। মৃণালকান্তিবাবু আরও জানান, কৃষি দফতর এলাকা চিহ্নিত করেছে। আর ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের মাধ্যমে কৃষকদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁরা কৃষি প্রযুক্তি সহায়কের মাধ্যমে প্রদর্শনী ক্ষেত্রগুলির উপর নজর রাখবে। কৃষিজীবীদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হবে। তিনি বলেন, “আগে ধান চাষের প্রদর্শনী ক্ষেত্র হয়েছে। তবে এক সঙ্গে এতটা ডাল শস্য চাষ এই প্রথম।”

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, তমলুক, পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, কাঁথি ১, কাঁথি ৩, রামনগর ১ ও ভগবানপুর ১ ব্লকে একটি করে মুগ চাষের প্রর্দশনী ক্ষেত্র করা হবে। জেলায় শুধুমাত্র কোলাঘাট ব্লকে একটি মসুর চাষের প্রদর্শনী ক্ষেত্র করা হবে। মহিষাদল, সুতাহাটা, নন্দীগ্রাম ১ ও ২ ব্লকে দু’টি করে খেসারি চাষের প্রদর্শনী ক্ষেত্র এবং হলদিয়া, কাঁথি ৩, ও খেজুরি ১ ও ২ ব্লকে আরও একটি করে খেসারি চাষের প্রদর্শনী ক্ষেত্র করা হবে বলে জানিয়েছে কৃষি দফতর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement