ঘেরাও। —নিজস্ব চিত্র।
দলের কর্মীদের মারধর করার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে কলেজের টিচার ইনচার্জকে দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করে রাখল ছাত্র পরিষদ। ঘটনাটি মেদিনীপুর কমার্স কলেজের। বৃহস্পতিবার দুপুর দু’টো থেকে সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত এই ঘেরাও কর্মসূচি চলে। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিলে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয় ছাত্র পরিষদ।
ঘটনাটি ঠিক কী?
ছাত্র পরিষদের অভিযোগ, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মীদের হাতে এ দিন তাঁদের দুই কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। কলেজ ক্যাম্পাসেই দু’জনকে মারধর করা হয়। প্রহৃতদের মধ্যে একজন বিদায়ী ছাত্র সংসদের এজিএস রাজা প্রামাণিক। অন্য জন বিদায়ী ছাত্র সংসদের কমন রুম (বয়েজ) সম্পাদক অনুপম ভট্টাচার্য। রাজা দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। অনুপম তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। এ দিন কলেজে এক শিবির চলছিল। সেই শিবিরে যোগ দেন দু’জন। দুপুরে দুই ছাত্রকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। মেদিনীপুর কমার্স কলেজের ছাত্র সংসদ আগে ছাত্র পরিষদের দখলে ছিল। রাজ্যে পালাবদলের পর চেষ্টা করেও সংসদের দখল পায়নি শাসক দলের ছাত্র সংগঠন। এ বার অবশ্য ছাত্র সংসদের দখল পেয়েছে টিএমসিপি।
দলের কর্মীদের মারধরের প্রতিবাদে এবং মারধরের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে দুপুর দু’টো থেকে কলেজের টিচার ইনচার্জ বিবেকানন্দ দাসমহাপাত্রকে ঘেরাও করেন ছাত্র পরিষদের কর্মী-সমর্থকেরা। দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও কর্মসূচি চলায় বিকেলে কলেজে আসেন পরিচালন সমিতির সভাপতি শ্যামলেন্দু মাইতি। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের আশ্বাস দেন, এ ক্ষেত্রে উপযুক্ত পদক্ষেপই করা হবে। পুরো ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হবে। এরপর সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ ঘেরাও কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
ছাত্র পরিষদের রাজ্য সহ- সভাপতি মহম্মদ সইফুল বলেন, “কলেজে শিক্ষার পরিবেশ নেই। নৈরাজ্য তৈরি করা হয়েছে। শিক্ষকদের একাংশও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এই গুণ্ডামিকে মদত দিচ্ছেন। এটা দুর্ভাগ্যের।” অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি বলেন, “কমার্স কলেজ ক্যাম্পাসে মারধরের কোনও ঘটনাই ঘটেনি। সব মিথ্যা অভিযোগ। ছাত্র সংসদ দখল করতে না পেরে কুত্সা অপপ্রচার করছে ওরা।”
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রহৃত দুই ছাত্র পরিষদ কর্মীর প্রাথমিক চিকিত্সা হয়। ঘটনা প্রসঙে মেদিনীপুর কমার্স কলেজের টিচার ইনচার্জ বিবেকানন্দ দাসমহাপাত্র বলেন, “একটা ঘটনা ঘটেছে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপই করা হচ্ছে।”