তমলুক আদালতে কর্মবিরতি চলছে। —নিজস্ব চিত্র।
শুক্রবারও অব্যাহত রইল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আদালতের আইনজীবী ও মুহুরিদের কর্মবিরতি। এ দিন বিকেলে রাজ্য বার কাউন্সিলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সনাতন মুখার্জী, আনসার মণ্ডল-সহ চার জনের প্রতিনিধি দল জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। বৈঠকে তাঁরা আইনজীবীদের নানা অভিযোগ শোনেন। সনাতন মুখোপাধ্যায় বলেন, “তমলুক জেলা আদালতের অচলাবস্থা কাটাতে আমরা এসেছি। আইনজীবীদের আন্দোলনের প্রতি আমাদের নৈতিক সমর্থন রয়েছে। আশা করছি, আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।” আজ, শনিবার জেলায় আসছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারক অসীম রায়। জেলাশাসকের সভাকক্ষে তিনি বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া আইনজীবী ও মুহুরিদের অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির জেরে জেলা আদালতে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। শুক্রবার আইনজীবী ও মুহুরিরা জেলা আদালতের ফৌজদারি বিভাগের ভবনের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান। পাশাপাশি, আদালতের প্রবেশপথ আটকে বসে থাকেন তাঁরা। বিক্ষোভকারী আইনজীবীরা জেলা বিচারকের পদত্যাগ করার দাবি জানিয়ে আদালতের প্রবেশ পথে প্ল্যাকার্ডও টাঙিয়ে দেয়। এমনকি আইনজীবী ও মুহুরিরা জেলা বিচারকের এজলাসের কাছে তাঁর অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখানোর সময় গো-ব্যাক স্লোগান দেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা আদালত চত্বরে বাড়তি পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। এদিকে আইনজীবী ও মুহুরিদের কর্মবিরতির জেরে আদালতে শুনানি না হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন বিভিন্ন মামলায় বাদী ও বিবাদী পক্ষের লোকেরা। ফৌজদারি আদালতের আইনজীবীদের সংগঠন ডিস্ট্রিক্ট বার অ্যাসোসিয়েশন, দেওয়ানি আদালতের আইনজীবীদের সংগঠন সিভিল বার এসোসিয়েশন ও মুহুরিদের সংগঠন ল-ক্লার্ক অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে। পাশাপাশি, তাঁরা জেলা আদালত চত্বরে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও বিচারক, আদালত কর্মীদের এজলাসে ঢুকতেও বাধা দিচ্ছে। তাতে জেলা আদালতের বিভিন্ন এজলাসে প্রায় বন্ধ শুনানির কাজ। আদালতের স্বাভাবিক কাজ ব্যহত হওয়ায় বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত আসামীদের গ্রেফতার করার পরে তাঁদের আদালতে পেশ করা নিয়ে বিপাকে পড়েছে জেলার বিভিন্ন থানার পুলিশ। জেলা আদালতে এই অচলাবস্থার জেরে সমস্যায় জেলা পুলিশও।