তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে ভাঙচুর-লুঠের অভিযোগে গ্রেফতার হলেন সিপিএমের সাঁকরাইল জোনাল কমিটির সম্পাদক বাদল রানা।
মঙ্গলবার দুপুরে সাঁকরাইলের কুলটিকরি গ্রামের বাড়ি থেকে বাদলবাবুকে গ্রেফতার করা হয়। একই অভিযোগে এ দিন আরও চার সিপিএম কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কাল, বৃহস্পতিবার সাঁকরাইলের ব্লক-সদর রোহিণীর দলীয় কার্যালয়ে সাঁকরাইল জোনাল কমিটির সম্মেলন হওয়ার দিন ধার্য রয়েছে। তার আগে দলীয় নেতা ও চার কর্মী-সহ পাঁচ জনের গ্রেফতারের ঘটনাটি নিয়ে শাসকদল ও পুলিশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে সিপিএম। বাদলবাবু ছাড়াও বাকি চার ধৃতেরা হলেন চিত্ত মঙ্গল, সুজন মল্লিক, পরিমল দণ্ডপাট ও নির্মল মঙ্গল। তৃণমূলের অভিযোগ, সোমবার রাতে কুলটিকরি বাজার এলাকায় বাদলবাবুর নেতৃত্বে সিপিএমের লোকজন তৃণমূল কর্মীদের ৬টি বাড়িতে ভাঙচুর-লুঠ চালায়। তৃণমূল কর্মীদের তিনটি মোটর বাইক ভাঙচুর করা হয়। এ দিন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী বিশ্বনাথ প্রধানের অভিযোগের ভিত্তিতে বাদলবাবু-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সিপিএমের অবশ্য অভিযোগ, স্থানীয় একটি ক্লাবকে ঘিরে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে ঝামেলা চলছে। সোমবার রাতে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর গোলমালের কারণেই ওই ক্লাবঘরে ভাঙচুরের ঘটনাটি ঘটে। সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য বিশ্বনাথ দাস বলেন, “কাল বৃহস্পতিবার সাঁকরাইল জোনাল কমিটির সম্মেলন রয়েছে। সম্মেলনে ব্যাঘাত ঘটানোর জন্যই শাসক দল পুলিশকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক চক্রান্ত করেছে। এলাকায় কোনও তৃণমূল কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর-লুঠের ঘটনাই ঘটেনি। পরিকল্পিত ভাবে চক্রান্ত করে সাজানো মামলায় বাদলবাবু-সহ পাঁচজনকে ফাঁসানো হয়েছে।”
তৃণমূলের সাঁকরাইল ব্লক সভাপতি সোমনাথ মহাপাত্র-র অভিযোগ, “বাদলবাবুর নেতৃত্বে সিপিএমের লোকেরা এলাকায় নতুন করে অশান্তি ছড়াতে চাইছে।” তাঁর দাবি, সাঁকরাইল ব্লকে তৃণমূলের কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই।” যদিও তৃণমূলের স্থানীয় এক সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লকের দু’জন নেতার গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বেআব্রু ভাবে প্রকাশ্যে চলে এসেছে। কুলটিকরি কলেজের পরিচালন কমিটির নিয়ন্ত্রণ হোক কিংবা এলাকার ক্লাবের নিয়ন্ত্রণ সব বিষয়েই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর গোলমাল এখন প্রকাশ্যেই ঘটছে।
তৃণমূল সমর্থক এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগে বছর খানেক আগেও গ্রেফতার হন বাদলবাবু। কিন্তু আদালতে ওই মহিলা ধর্ষণের ঘটনাটি অস্বীকার করায় ওই মামলা থেকে বেকসুর খালাস পান বাদলবাবু। পরে অবশ্য ওই মহিলার স্বামী সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন, তাঁর স্ত্রীকে চাপ দিয়ে ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ করানো হয়েছিল।