খাবার দোকানের কর্মী বিমল মাহাতোকে মারধর করে খুনের ঘটনায় শেষমেশ ছয় অভিযুক্তেরই জামিল বাতিল করে দিল ঝাড়গ্রাম প্রথম এসিজেএম আদালত। এই ঘটনায় প্রথমে শুধু মারধরের অভিযোগ দায়ের হওয়ায় অভিযুক্তরা জামিন পেয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পরে মামলায় জামিন অযোগ্য খুনের ধারা যুক্ত হয়। তারই প্রেক্ষিতে সোমবার ঝাড়গ্রাম প্রথম এসিজেএম আদালতের বিচারক কৃষ্ণমুরারিপ্রসাদ গুপ্ত ওই ছয় অভিযুক্তের জামিন বাতিল করে ১৪ দিন জেল হাজতের নির্দেশ দেন।
মারধরের জেরে বিমলবাবুর মৃত্যুর পরে ওই মামলায় খুনের ধারা যুক্ত করেছিল পুলিশ। তার আগেই অবশ্য দশ অভিযুক্তের মধ্যে ৯ অভিযুক্ত আদালত থেকে জামিন পেয়ে যায়। ৮ অভিযুক্তের জামিন বাতিলের জন্য ঝাড়গ্রাম প্রথম এসিজেএম আদালতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী অফিসার তথা ঝাড়গ্রাম থানার সাব-ইন্সপেক্টর প্রদীপ রথ। নাবালক এক অভিযুক্তের জামিন বাতিলের জন্য মেদিনীপুরের জুভেনাইল আদালতে আবেদন জানানো হয়। পুলিশের আবেদনের শুনানির জন্য ৮ অভিযুক্তকে এ দিন ঝাড়গ্রাম প্রথম এসিজেএম আদালতে হাজির করানোর জন্য দুই জামিনদারকে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। জামিনপ্রাপ্ত আট অভিযুক্তের মধ্যে ৬ জন এ দিন আদালতে হাজির হয়। বিচারক তাদের জামিন বাতিল করে জেল হাজতে পাঠান। সৌম্যদীপ মজুমদার নামে এক অভিযুক্ত ‘অসুস্থতার’ জন্য হাজির হতে পারেন নি বলে দাবি করেন তাঁর আইনজীবী। সৌম্যদীপ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। সুস্থ হওয়া মাত্র সৌম্যদীপকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আর এক অভিযুক্ত অমিত দাস এ দিন আদালতে হাজির হন নি। অমিতের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। আজ, মঙ্গলবার মেদিনীপুর জুভেনাইল আদালতে নাবালক অভিযুক্তের জামিন বাতিলের শুনানি হবে।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ঝাড়গ্রাম মিনি চিড়িয়াখানা এলাকায় চাহিদামতো সিগারেট না পয়ে দোকানদারকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল একদল স্কুল-কলেজ পড়ুয়াদের বিরুদ্ধেদোকানটির মালিক প্রদীপ মাহাতোকে বাঁচাতে ছুটে এসেছিলেন তাঁর কাকা বিমল মাহাতো (৩৬)। হামলাকারীদের মারে জখম হন বিমলবাবু। ২৭ ফেব্রুয়ারি এসএসকেএমে মৃত্যু হয় বিমলবাবুর। ১০ জনের বিরুদ্ধে ঝাড়গ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বিমলবাবুর ভাইপো প্রদীপ মাহাতো। পুলিশ প্রথমে মামলাটি মারধরের জামিনযোগ্য ধারায় রুজু করায় ৯ জন জামিন পেয়ে যায়। পরে মামলায় খুনের ধারা যোগ হওয়ার পরে গত ৩ মার্চ অন্যতম মূল অভিযুক্ত পলিটেকনিক ছাত্র সুদীপ প্রতিহারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সুদীপ জেল হাজতে রয়েছেন।