বেআইনি গাঁজার কারবারে জড়িত এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে ফেরার সময় গ্রামবাসীদের হতে আক্রান্ত হল পুলিশের একটি গাড়ি। শনিবার রাত ৯টা নাগাদ জামবনি থানার ঘুটিয়া গ্রামের ঘটনা। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে গাড়িটিকে লক্ষ্য করে যথেচ্ছ ইটপাথর ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। মারধর করা হয় পুলিশ কর্মীদের। গ্রামবাসীদের ছোড়া ইটের ঘায়ে জখম হন চার পুলিশ কর্মী। পুলিশের গাড়িটিও ভাঙচুর করা হয়। আহত পুলিশ কর্মীদের মধ্যে এক মহিলা পুলিশ কর্মীও রয়েছেন। তাঁর আঘাত গুরুতর।
পুলিশের দাবি, ঘুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা বছর পঁয়তাল্লিশের হাবলু তরাই দীর্ঘ দিন ধরে বেআইনি গাঁজার কারবার করতেন। পার্শ্ববর্তী ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা রাজ্যেও তিনি গাঁজার কারবারে যুক্ত ছিলেন। শনিবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এসডিপিও (ঝাড়গ্রাম) বিবেক বর্মার নেতৃত্বে জামবনি থানার পুলিশের একটি দল ঘুটিয়া গ্রামে হাবলুবাবুর বাড়িতে হানা দেয়। হাবলুবাবুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আটক করা হয় দশ কেজি গাঁজা। অভিযুক্তকে নিয়ে এসডিপিও’র গাড়িটি বেরিয়ে যায়। এই খবর রটে যেতেই লাঠিসোটা নিয়ে তেড়ে আসেন একদল গ্রামবাসী। এসডিপিও’র গাড়ির পিছনে থাকা পুলিশের একটি সাদা রঙের গাড়িকে ঘিরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। বিদ্যুতের জাম্পার নামিয়ে অন্ধকার করে দিয়ে গাড়িটিকে ঘিরে ইটপাথর ছুড়তে থাকেন গ্রামবাসীরা। লাঠি দিয়ে ভাঙা হয় গাড়ির জানালার কাঁচ। ইটপাথরের আঘাতে এক মহিলা-সহ চার পুলিশ কর্মী জখম হন। পুলিশ কর্মীদের গাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে জামবনি থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে আক্রান্ত পুলিশ কর্মীদের উদ্ধার করে। জখম পুলিশ কর্মীদের চিল্কিগড় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। মহিলা পুলিশ কর্মী ময়না মুর্মুর মাথা ফেটে যাওয়ায় চারটি সেলাই করতে হয়েছে। তাঁর বুকেও আঘাত লেগেছে। পুলিশকে মারধর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় দেড়শো জন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “হাবলু তরাই নামে ওই গাঁজা বিক্রেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশকে মারধর ও সরকারি কাজে বাধাদানের ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করা যায় নি। তবে দশজন গ্রামবাসীকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজ তল্লাশি চলছে।”