বিদ্যাসাগর শিল্পতালুকের ময়দানে মমতার সভাস্থল দেখতে আসার কথা ছিল মুকুল রায়ের। অপেক্ষাই সার তৃণমূল নেতাদের। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
কথা দিয়েও শেষ পর্যন্ত খড়্গপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংগঠনিক সভার প্রস্তুতি দেখতে এলেন না তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। শুক্রবার খড়্গপুরের বিদ্যাসাগর শিল্পতালুক ময়দানে তৃণমূলনেত্রীর প্রস্তাবিত সভাস্থল দেখতে আসার কথা ছিল মুকুলবাবুর। এ দিন দুপুর ১২টায় মুকুলবাবুর আসার কথা থাকলেও পরে জানানো হয়, দুপুর দেড়টা নাগাদ তিনি আসবেন। সেই অনুযায়ী সভাস্থলে সময়মতো চলে আসেন জেলা তৃণমূল সভাপতি দীনেন রায়, দলের চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি, কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোত্ ঘোষ, জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ-সহ তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বও। রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্রকে দফায় দফায় সিবিআইয়ের জেরা করা নিয়ে এ দিন সকাল থেকেই উদ্বেগে ছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বিকেল ৪টের সময়ও মুকুলবাবু না আসায় চিন্তা আরও বাড়ে জেলা নেতৃত্বের। পরে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্রের গ্রেফতার হওয়ার খবর চাউর হতেই একে একে মাঠ ছাড়তে থাকেন কয়েকজন জেলা নেতা। মৃগেনবাবুও জানিয়ে দেন, কলকাতায় বিশেষ বৈঠকে ব্যস্ত থাকায় মুকুলবাবু আসতে পারছেন না। এই ঘটনায় শেষ পর্যন্ত তৃণমূল নেত্রীর সভা হওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন দলের ব্লক নেতাদের একাংশও। দলের এক ব্লক সভাপতির কথায়, “মদন মিত্রের গ্রেফতারের ঘটনা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। ফলে নেত্রীর সভা নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েছেই।”
আগামী ১৯ ডিসেম্বর পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের নেতা-কর্মীদের নিয়ে খড়্গপুরে সাংগঠনিক বৈঠক করার কথা তৃণমূলনেত্রীর। প্রথমে ঠিক ছিল, খড়্গপুরে রেলের বিএনআর ময়দানে সভা হবে। কিন্তু রেল সভা করার অনুমতি না দেওয়ায় পিছু হঠে তৃণমূল নেতৃত্ব। রেলের সঙ্গে সংঘাতে না গিয়ে বিকল্প সভাস্থল ঠিক করতে উদ্যোগী হয় জেলা নেতৃত্ব। খড়্গপুর শহর ঘেঁষা গ্রামীণ থানা এলাকার রূপনারায়ণপুর মৌজার বিদ্যাসাগর শিল্পতালুকের ময়দানেই সভাস্থল ঠিক হয়। সভার প্রস্তুতি হিসেবে কাজ বলতে মাঠে একটি শামিয়ানা টাঙানো হয়েছে। মাঠ সমান করতে রোলার চালানো-সহ সভার অধিকাংশ কাজই এখনও বাকি। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “রাজ্যের কোনও এক জন নেতা অন্তত ময়দানটি চূড়ান্ত করে গেলে পুরোদমে প্রস্তুতি শুরু করা যায়। তবে এখনও কেউ না আসায় সভার প্রস্তুতির কাজে গতি আসছে না। এ দিনও মুকুল রায় না আসায় কিছুটা মনোবল হারিয়েছে কর্মীরা।”
জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোত ঘোষ বলেন, “সভা হবে কী না সে বিষয়ে আমাদের কাছে কোনও খবর নেই। তবে আমরা নিশ্চিত, আমাদের কর্মসূচি হবেই।” যদিও জেলা তণমূল সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “সভা হবে বলেই আমরা এখনও ময়দানে রয়েছি। আমাদের ৫০ হাজার কর্মী আসার লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে যাবে।” তাঁর অভিযোগ, “একটা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র চলছে। তবে সেই চক্রান্ত ব্যর্থ হবে।”