কড়া নজরদারিতে আজ শুরু উচ্চ মাধ্যমিক

আজ, শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা (নতুন সিলেবাস)। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে পুরনো সিলেবাসের পরীক্ষা। পরীক্ষা গ্রহণ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জেলা শিক্ষা দফতর ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক অন্তরা আচার্য জানান, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় সব পদেক্ষেপ করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৫ ০০:২৪
Share:

পরীক্ষার প্রস্তুতি। বৃহস্পতিবার তমলুকের একটি স্কুলে।

আজ, শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা (নতুন সিলেবাস)। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে পুরনো সিলেবাসের পরীক্ষা। পরীক্ষা গ্রহণ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জেলা শিক্ষা দফতর ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক অন্তরা আচার্য জানান, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় সব পদেক্ষেপ করা হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছনোর জন্য বাস-সহ গাড়ি চলাচলে যাতে কোন অসুবিধা না হয়, সে জন্য রাস্তায় পুলিশি টহলদারির ব্যবস্থা থাকছে। এ ছাড়া কোনও পরীক্ষার্থীর অসুবিধা হলে তা জানানোর জন্য একাধিক কন্ট্রোল রুমও খোলা হচ্ছে।

Advertisement

মাধ্যমিকের পর এ বার উচ্চ-মাধ্যমিকেও ছাত্রের তুলনায় ছাত্রী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি পূর্ব মেদিনীপুরে। এ বার জেলায় মোট উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০ হাজার ৮১৩ জন। তার মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা ২৫ হাজার ৯৮০ জন। ছাত্র পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২৪ হাজার ৮৩৩ জন। অর্থাত্‌ ছাত্রের তুলনায় ছাত্রীর সংখ্যা এক হাজার ১৪৭ জন বেশি। গত বছর জেলায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৪০, ১৯৮ জন। তার মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ছিল ২০, ১৭১। ছাত্রী ছিল ২০,০২৭ জন।

জেলার তমলুক, হলদিয়া, কাঁথি ও এগরা এই চারটি মহকুমার মধ্যে তমলুক ও কাঁথি মহকুমায় পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রের চেয়ে ছাত্রী সংখ্যা বেশি। হলদিয়া ও এগরা মহকুমায় পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রের চেয়ে ছাত্রীর সংখ্যা কম। তমলুক মহকুমায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮ হাজার ৭১ জন। এরমধ্যে ছাত্র সংখ্যা ৮ হাজার ২৩৯ জন। ছাত্রীর সংখ্যা ৯ হাজার ৮৩২ জন। হলদিয়া মহকুমায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৯ হাজার ৯১২ জন। এরমধ্যে ছাত্র ৫ হাজার ১৩৩ জন। ছাত্রী ৪ হাজার ৭৭৯ জন। কাঁথি মহকুমায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩ হাজার ৭০৩ জন। এরমধ্যে ছাত্র ৬ হাজার ৯৯৩ জন। ছাত্রী ৬ হাজার ৭১০ জন। এগরা মহকুমায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৯ হাজার ১২৭ জন। এরমধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ৪ হাজার ৪৬৮ জন ছাত্রীর সংখ্যা ৪ হাজার ৬৫৯ জন।

Advertisement

শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার জেলায় মোট উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ৬১টি। এরমধ্যে প্রধান পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্র ৪৯টি। আর সহায়ক পরীক্ষাকেন্দ্র ১২টি। গত বছর পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৫৭টি। পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) রবিকান্ত সিমলাই জানান, পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে প্রতিটি কেন্দ্র চত্বরে ১৪৪ ধারা জারী থাকছে। প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে মোতায়েন থাকছে পর্যাপ্ত পুলিশ বাহিনীও। পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল, ক্যালকুলেটার নিয়ে প্রবেশ ও ব্যবহার নিষিদ্ধ। পরীক্ষার দিনগুলিতে পরীক্ষাকেন্দ্রের কাছে জেরক্স সেন্টারও বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অন্য দিকে, পশ্চিম মেদিনীপুরেও গত বছরের তুলনায় এ বার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। গত বছর জেলায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৪৯ হাজার ৩৯৫। এ বার সেখানে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০ হাজার ৮০৪। গত বছর জেলায় পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৯৪টি। এ বার তা বেড়ে হয়েছে ৯৯টি। গত বছর মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ছিল ২৬ হাজার ৫৮৪। ছাত্রী সংখ্যা ছিল ২২ হাজার ৮১১। এ বার সেখানে মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ২৬ হাজার ৩৪৮। ছাত্রী ২৪ হাজার ৪৫৬ জন। অর্থাত্‌ গত বছরের তুলনায় এ বার ছাত্রী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ১ হাজার ৬৪৫ জন। উচ্চ মাধ্যমিকে ছাত্র পরীক্ষার্থীর সংখ্যা গত বারের থেকে কমেছে ২৩৬ জন। মাধ্যমিকের মতো উচ্চ মাধ্যমিকেও ‘স্পর্শকাতর’ কেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে। যেখানে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা থাকবে। প্রয়োজনে গোপন ক্যামেরায় ভিডিওগ্রাফিও করা হবে। জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র বলেন, “সুষ্ঠু ভাবে পরীক্ষা- পর্ব সম্পন্ন করতে সব রকম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে। আগের থেকে পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। এরফলে পরীক্ষার্থীদের সুবিধে হবে।”

ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন পরীক্ষা গ্রহণ কেন্দ্রেও সুষ্ঠু ভাবে পরীক্ষা গ্রহণ সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঘাটালের মহকুমাশাসক রাজনবীর সিংহ কাপুর বলেন, “সুষ্ঠু ভাবে পরীক্ষার জন্য সমস্ত রকম ব্যবস্থায় নেওয়া হয়েছে। খোলা হয়েছে একটি কন্ট্রোল রুমও। সমস্যা হলে অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রীরা (০৩২২৫ ২৫৫-১৪৫)- এই নম্বরে ফোন করতে পারবেন।” প্রশাসন সূত্রে খবর, পরীক্ষার কয়েকদিন পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রের ৫০০ মিটারের মধ্যে জেরক্সের দোকান বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের কাছে কোনও সাউন্ড বক্সও বাজানো যাবে না। প্রতিটি কেন্দ্রে মেডিক্যাল টিম রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement