দীর্ঘ দিন বাদে ভোট হতে চলেছে মেদিনীপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থায়। ভোটের দিন স্থির হয়েছে আগামী ৩০ মার্চ। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ কমিটির ২০টি আসনে ওই দিন ভোট হবে। ভোটগ্রহণ শুরু হবে সকাল সাড়ে দশটায়। চলবে বিকেল সাড়ে চারটে পর্যন্ত।
ইতিমধ্যে নির্বাচনী বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। সেই মতো আজ, বুধবার থেকেই শুরু হচ্ছে মনোনয়ন-পর্ব। আজ মনোনয়নপত্র তোলার দিন নির্দিষ্ট রয়েছে। আগামী ১৪-১৫ মার্চ তা জমা দেওয়া যাবে। ১৮ মার্চ মনোনয়নপত্রগুলো পরীক্ষা করে দেখা হবে। ২০ মার্চ প্রত্যাহারের দিন। মেদিনীপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির কনভেনর তথা সংস্থার ইলেকশন অফিসার জগবন্ধু অধিকারী বলেন, “সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন-পর্ব সম্পন্ন করতে সব রকম ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে।”
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ কমিটির সদস্য সংখ্যা ৪৭। এরমধ্যে ২০ জন নির্বাচিত প্রতিনিধি থাকেন। বাকিরা মনোনীত। পদাধিকার বলে কমিটির সদস্য হবেন জেলাশাসক গুলাম আলি আনসারি, জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। জেলাশাসকই সংস্থার সভাপতি হন। পুরনো পূর্ণাঙ্গ কমিটির বদলে এখন জেলা ক্রীড়া সংস্থায় অ্যাডহক কমিটি রয়েছে। এই কমিটিই নির্বাচন-পর্ব সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করার উদ্যোগ নিয়েছে। সংস্থার সদস্যরাই ভোট দেবেন। সদস্য সংখ্যা সব মিলিয়ে ৩৪০ জন। এর মধ্যে আজীবন সদস্য ২৩৩ জন। অ্যাসোসিয়েট মেম্বার ১০৭ জন। অ্যাসোসিয়েট মেম্বারদের ফি বছর সদস্যপদ পুনর্নবীকরণ করাতে হয়।
গত বছর ফেব্রুয়ারিতে সংস্থার দায়িত্ব নেয় অ্যাডহক কমিটি। তার আগে দীর্ঘ এক দশক ধরে জেলা ক্রীড়া সংস্থার বিরুদ্ধে মেদিনীপুর আদালতে মামলা চলেছে। সংস্থার বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ এনে ২০০০ সালে মেদিনীপুর আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে সংস্থার সাধারণ সভা ডাকা হয়নি, মূলত এই অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। জেলা ক্রীড়া সংস্থার বিরুদ্ধে মামলাটি করেন আশিস চক্রবর্তী-সহ ৬ জন। পরবর্তীকালে এঁদের উদ্যোগে মেদিনীপুরে স্পোটর্স লাভার্স অ্যাসোসিয়েশন গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলায় এক দিকে যেমন হয়রানি হচ্ছিল, অন্য দিকে তেমন খরচও হচ্ছিল। রাজ্যে পালাবদলের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতি দেখে আপসে মামলার নিষ্পত্তি করতে উদ্যোগী হয় দু’পক্ষ। আলোচনা শুরু হয়। সেই মতো গত বছর ফেব্রুয়ারিতে মামলার নিষ্পত্তি হয়। আদালতের নির্দেশে পুরনো কমিটি ভেঙে একটি অ্যাডহক কমিটি গড়া হয়। যে কমিটির সদস্য সংখ্যা ১১। আগে যিনি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক ছিলেন, সেই কৃষ্ণদাস পালও এই কমিটিতে রয়েছেন। সঙ্গে রয়েছেন জগবন্ধু অধিকারী, প্রণব বসু, রামানন্দ মুখোপাধ্যায়, মনোবিলাস দে, বিজয়গোপাল মল্লিক, বিনয় দাসমাল, বিদ্যুৎ স্যানাল, আশিস চক্রবর্তী, বিদ্যুৎ বসু এবং দীনেন রায়।
এক দশকের মামলা আপসে মিটে যাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে মেদিনীপুরের ক্রীড়া মহলও। অ্যাডহক কমিটি কী কী কাজ করবে, সেই জন্য সব মিলিয়ে ১৪ দফা শর্তও দিয়েছিল আদালত। আদালত জানিয়ে ছিল, এই সব শর্ত মেনেই কমিটিকে কাজ করতে হবে। আদালতের নির্দেশ মতোই এ বার জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। নির্বাচনে একটি না একাধিক প্যানেল জমা পড়ে, সেটাই দেখার। একাধিক প্যানেল জমা পড়লে ভোটাভুটি হবে। একটি প্যানেল জমা পড়লে অবশ্য ভোটাভুটির প্রয়োজন নেই। ওই প্যানেলই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হবে।