বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরে ‘স্পট বিলিং’ পদ্ধতি চালু হতে চলেছে। এর ফলে চুক্তির ভিত্তি কাজ করা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা কাজ হারাবেন। প্রতিবাদে সোমবার থেকে সবং ব্লকে সাব-স্টেশন ম্যানেজারের অফিসের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে সামিল হয়েছে ১২টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। তাঁদের অভিযোগ, প্রায় দেড় মাস ধরে তাঁরা কাজ পাননি। তার উপর বকেয়া টাকা না দিয়েই তাঁদের কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। কাজ ফিরে না পেলে অবস্থান চালিয়ে যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।
বিদ্যুতের বিল ব্যবস্থায় নতুন প্রযুক্তি চালু হওয়ায় যে সমস্যা হচ্ছে তা মানছে বিদ্যুৎ দফতরও। বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার কমলকুমার মাইতি বলেন, “এই ব্যবস্থা গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়েই চালু হচ্ছে। এখন যাঁরা কাজ করবেন, কারিগরি জ্ঞান থাকা জরুরি। তাই সর্বত্রই ওই কাজের দায়িত্ব থেকে স্বনির্ভর দলের মহিলাদের বাদ দেওয়া হয়েছে।”
কয়েক বছর ধরেই রাজ্যের বেশ কিছু ব্লকে বিদ্যুৎ দফতর স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটার রিডিং নেওয়া, বিল পাঠানোর কাজ করছিল। ২০০৬ সাল থেকে সবং ব্লকের ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ১২টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা এই কাজ করছিলেন। চুক্তির ভিত্তিতে কাজ পেয়েছিলেন প্রতিটি দলের ১০ থেকে ১১ জন মহিলা। গত ২৩ জুন তাঁদের বসিয়ে দেওয়া হয়।
বিদ্যুৎ বন্টন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এত দিন গ্রাহকদের বাড়ি থেকে বিদ্যুতের মিটার রিডিং নিয়ে যাওয়ার পর অফিসে বিল তৈরি করে গ্রাহকদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হত। এই প্রক্রিয়ায় যথাসময়ে বিল না পাওয়ায় গ্রাহকদের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধত। সমস্যা এড়াতে বিদ্যুৎ দফতর এখন গ্রাহকের বাড়িতে মিটার রিডিং দেখে বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে হাতেহাতে বিল দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এই প্রক্রিয়ায় কাজ করতে গেলে প্রযুক্তি জ্ঞান থাকা বাঞ্ছনীয়। তাই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের বাদ দেওয়া হয়েছে বলে বিদ্যুৎ বিদ্যুৎ বন্টন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। কাজ হারানো স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য গীতা মান্না, অঞ্জলি বর্মনরা অবশ্য বলেন, “আমাদের কারও দেড়-দু’বছরের টাকা বকেয়া রয়েছে। সেই অবস্থায় ‘স্পট বিলিং’-এর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেও তা না দিয়েই বসিয়ে দেওয়া হল।” তাই তাঁরা অবস্থান চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।