কম্পিউটার ঘর দখলের অভিযোগ

আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত শুরু

অরণ্যশহরে সরকারি আদিবাসী স্কুলের ক্লাসঘর জবর-দখল করে রাখার অভিযোগের তদন্ত শুরু করল প্রশাসন। অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রকল্প আধিকারিক সৌমেন্দু বিশ্বাসের বিরুদ্ধে স্কুলের কম্পিউটার ঘর দখল করে রাখার অভিযোগ জানিয়েছিল ‘ঝাড়গ্রাম একলব্য আদর্শ আবাসিক বিদ্যালয়’-এর পড়ুয়ারা। পাশাপাশি, ওই আধিকারিকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সঙ্গে অভদ্র আচরণ ও শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের গালিগালাজেরও অভিযোগ ওঠে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:১৬
Share:

অরণ্যশহরে সরকারি আদিবাসী স্কুলের ক্লাসঘর জবর-দখল করে রাখার অভিযোগের তদন্ত শুরু করল প্রশাসন।

Advertisement

অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রকল্প আধিকারিক সৌমেন্দু বিশ্বাসের বিরুদ্ধে স্কুলের কম্পিউটার ঘর দখল করে রাখার অভিযোগ জানিয়েছিল ‘ঝাড়গ্রাম একলব্য আদর্শ আবাসিক বিদ্যালয়’-এর পড়ুয়ারা। পাশাপাশি, ওই আধিকারিকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সঙ্গে অভদ্র আচরণ ও শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের গালিগালাজেরও অভিযোগ ওঠে। গত ১০ সেপ্টেম্বর পড়ুয়া, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা স্কুলের সভাপতি তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) সুশান্ত চক্রবতীর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। তবে রবিবার আনন্দবাজারে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হতে তড়িঘড়ি ওই রাতেই স্কুলে তদন্তে আসেন অতিরিক্ত জেলাশাসক সুশান্তবাবু। সঙ্গে ছিলেন ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক ও আদিবাসী উন্নয়ন নিগমের এক কর্তা।

রবিবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত ঘন্টা তিনেক সুশান্তবাবুরা স্কুলে ছিলেন। প্রশাসনিক কর্তারা স্কুলে থাকাকালীন বাইরে থেকে ওই আবাসিক স্কুলে ঢোকার সব ক’টি দরজায় তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। তিন আধিকারিক দফায় দফায় ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রশাসনের তরফে অভিযোগকারীদের বক্তব্য ও কথপোকথনের পাশাপাশি, তদন্তের পুরো প্রক্রিয়াটি ভিডিং রেকর্ডিং করা হয়। তদন্তকারী প্রশাসনিক কর্তারা অভিযোগকারী ছাত্রী ও শিক্ষকদের প্রত্যেকের কাছ থেকে পৃথক ভাবে লিখিত অভিযোগপত্র নেন।

Advertisement

কিন্তু সারা দিন থাকতে কেন ওই তিন প্রশাসনিক কর্তা রবিবার রাতে তদন্তে করতে গিয়েছিলেন সেই প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকদের একাংশ। এ ব্যাপারে সরব হয়েছে একাধিক আদিবাসী সংগঠন। তাদের অভিযোগ, তদন্তের নামে প্রশাসনিক কর্তারা কার্যত পড়ুয়া-শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের যে ভাবে জেরা করেছেন, তা কার্যত অভিযুক্তকে আড়াল করারই চেষ্টামাত্র। সোমবার সকালে আদিবাসী উন্নয়ন নিগমের এক আধিকারিক ফের স্কুলে তদন্তে আসেন। এ ছাড়া সোমবার সকালে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতরের আধিকারিকেরাও স্কুলে এসে টিচার-ইনচার্জ নৃপেন টুডু ও অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

আদিবাসী যুব সংগঠন জুয়ান গাঁওতার সম্পাদক প্রবীর মুর্মু বলেন, “অভিযুক্ত আধিকারিককে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে। রাতের অন্ধকারে স্কুলে এসে কেন তদন্ত হল। কেন দিনের বেলা হল না? আদিবাসীদের এই স্কুলটির ব্যাপারে প্রশাসন একেবারেই উদাসীন। এ ব্যাপারে প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।” আদিবাসী সামাজিক সংগঠন ‘ঝাড়গ্রাম খেরওয়াল মাঝি মহল’-এর সম্পাদক যজ্ঞেশ্বর হেমব্রম বলেন, “স্কুলের মেন গেট ও পিছনের গেটে তালা দিয়ে রাত দশটা পর্যন্ত স্কুলের অফিস ঘরে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের জেরা করা হয়েছে। প্রশাসনের আধিকরিকেরা কীসের এত ভয় পাচ্ছেন?”

অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) সুশান্ত চক্রবর্তী বলেন, “রবিবার সন্ধ্যায় তদন্ত করতে গিয়েছিলাম। এর বেশি কিছু বলব না। যা বলার জেলাশাসক বলবেন।” জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) তদন্ত করেছেন। তদন্ত রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট মহলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর মন্তব্য করব না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement