আজ ফের মমতার সভা, রোদই চিন্তা

দ্বিতীয় দফায় নির্বাচনী প্রচারে আজ, বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বারও জেলার তিন প্রান্তে তিনটি জনসভা করবেন তিনি। সেই মতো প্রস্তুতিও সারা হয়েছে। একটি সভা হবে মেদিনীপুরের অভিনেত্রী প্রার্থী সন্ধ্যা রায়ের সমর্থনে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর ও ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৪ ০০:৫৫
Share:

নারায়ণগড়ে সভার প্রস্তুতি।

দ্বিতীয় দফায় নির্বাচনী প্রচারে আজ, বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বারও জেলার তিন প্রান্তে তিনটি জনসভা করবেন তিনি। সেই মতো প্রস্তুতিও সারা হয়েছে। একটি সভা হবে মেদিনীপুরের অভিনেত্রী প্রার্থী সন্ধ্যা রায়ের সমর্থনে। অন্য দু’টি সভা হবে অভিনেতা প্রার্থী ঘাটালের দেবের সমর্থনে। দলীয় সূত্রে খবর, আকাশপথে জেলায় আসবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই জন্য সভাস্থলের অদূরে হেলিপ্যাড তৈরি করা হয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার তিনটি এলাকাতে গিয়েই প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়। দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন। দীনেনবাবু বলেন, “তিনটি সভাতেই বিপুল সংখ্যক মানুষের জমায়েত হবে। গরমটা বেশ ভালই রয়েছে। তাই কর্মীদের বলেছি, সভায় যাঁরা আসবেন, তাঁরা যেন সঙ্গে জল রাখেন।”

বুধবার বেলা একটা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম সভাটি হবে বেলদার বাখরাবাদে। মেদিনীপুর লোকসভার অন্তর্গত এই এলাকা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের নির্বাচনী এলাকা নারায়ণগড়ের অন্তর্গত। সভা হবে স্থানীয় জগন্নাথ মন্দির সংলগ্ন মাঠে। দ্বিতীয় সভাটি হবে বেলা দু’টোয় সবংয়ের তেমাথানিতে। সবং প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বিধায়ক মানস ভুঁইয়ার নির্বাচনী এলাকা। মানসবাবু ঘাটালে দলের প্রার্থীও হয়েছেন। সভা হবে স্থানীয় সুভাষপল্লীর মাঠে। তৃতীয় সভাটি হবে বেলা তিনটের সময় ঘাটালের স্থানীয় হাইস্কুল মাঠে। মুখ্যমন্ত্রীর সভার সমর্থনে গত কয়েক দিন ধরেই এই তিনটি এলাকায় প্রচার হয়েছে। প্রচার চালিয়েছেন দলের কর্মী- সমর্থকেরা। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, গরম উপেক্ষা করেই হাজার হাজার মানুষ দলনেত্রীর কথা শুনতে আসবেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেনবাবু বলেন, “শুকনো গরমের দাপটে মানুষ সমস্যায় পড়ছেন। তবে, মুখ্যমন্ত্রীর সভা ঘিরে মানুষের মধ্যে উচ্ছ্বাস- উন্মাদনা তৈরি হয়েছে। আমরা নিশ্চিত, তিনটি সভাতেই মানুষের ভিড় উপচে পড়বে।”

Advertisement

ঘাটালে হেলিপ্যাড।

নির্বাচনী প্রচারে গত ৩১ জানুয়ারি জেলায় এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দিনও তিনি তিনটি সভা করেন। সভা হয় কেশিয়াড়ি, গড়বেতা এবং কেশপুরে। প্রথম দফার প্রচারেও আকাশপথে জেলায় আসার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। তবে হেলিকপ্টার বিভ্রাটে তা সম্ভব হয়নি। শেষমেশ, সড়ক- পথেই জেলায় আসেন তিনি। দলীয় সূত্রে খবর, হেলিপ্যাড তৈরি হয়েছে সভাস্থলের আশপাশেই। এক- দেড় কিলোমিটারের মধ্যে। যাতে কপ্টার থেকে নেমে সড়ক পথে খুব সহজেই সভাস্থলে পৌঁছতে পারেন তৃণমূলনেত্রী। মেদিনীপুর- ঘাটালের মতো কেন্দ্রে খুব একটা স্বস্তিতে নেই তৃণমূল। দলীয় নেতৃত্ব জয় নিয়ে নিশ্চিত থাকলেও জয়ের ব্যবধান কত হবে, সেই নিয়ে নেতৃত্বের একাংশের সংশয় রয়েছে। মেদিনীপুরের বামপ্রার্থী প্রবোধ পণ্ডা তিনবারের সাংসদ। ফলে, নির্বাচনী এলাকা তাঁর চেনা। অন্যদিকে, ঘাটালের কংগ্রেস প্রার্থী মানস ভুঁইয়াও বিস্তীর্ণ এলাকায় ‘জনপ্রিয়’। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলনেত্রী দ্বিতীয় দফায় জেলায় প্রচারে এসে ঠিক কী বার্তা দেন, তার জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন দলের কর্মী- সমর্থকেরাও।

আজ সবং, নাড়ায়ণগড়ের পর মুখ্যমন্ত্রীর শেষ জনসভাটি হবে ঘাটালে। এ দিন বিকাল তিনটেয় ঘাটাল শহরের পাঁশকুড়া বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বিদ্যাসাগর হাইস্কুল মাঠে সভাটি হবে। ইতিমধ্যেই মঞ্চের কাজও শেষ। তৈরি হেলিপ্যাডের কাজও। মঙ্গলবার ঘাটালে একাধিকবার হেলিকপ্টার চক্করও মেরেছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, এদিন মুখ্যমন্ত্রী ঘাটাল শহরের অরবিন্দ স্টেডিয়ামে প্রথমে কপ্টারে করে নামবেন। পরে অরবিন্দ স্টেডিয়াম থেকে মুখ্যমন্ত্রী সড়ক পথেই সভাস্থলে আসবেন। মুখ্যমন্ত্রীর জনসভাকে সফল করতে জোরকদমে প্রচারে ব্যস্ত দলীয় নেতারা। জনসভায় ঘাটাল মহকুমা থেকে দলের সব কর্মী-সমর্থকেরা আসবেন। চন্দ্রকোনা বিধানসভা আরামবাগ লোকসভার অধীন হলেও আজকের জনসভায় চন্দ্রকোনা থেকেও দলীয় সমর্থকেরা যোগ দেবেন। এই সভা থেকেই মুখ্যমন্ত্রী আরামবাগ লোকসভা আসনের তৃণমূল প্রার্থী আফরিন আলির হয়েও প্রচার করবেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। সভা ঘিরে মঙ্গলবার থেকে গোটা ঘাটাল শহর পুলিশি নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে। চলছে পুলিশি টহল, রুটমার্চ।

তৃণমূল সূত্রের খবর, এ দিন বিকেল তিনটেয় সভায় হাজির হওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। সঙ্গে থাকবেন ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী দেব, একাধিক মন্ত্রী-সহ দলের একাধিক রাজ্যস্তরের নেতৃত্বরাও। প্রখর রোদে যাতে সভায় আসা মানুষেক পানীয় জল ও খাবারের কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। শহরের সব হোটেলে বেশি পরিমাণে খাবারের আয়োজন করার আর্জি জানানোর পাশাপাশি অস্থায়ী খাবারের একাধিক দোকানের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও খবর। ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই বলেন, “যাতে দলীয় কর্মী থেকে সাধারণ মানুষ খাবার ও পানীয় জলের সমস্যায় না পড়েন, তার জন্য আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। মোড়ে মোড়ে জলের ও অস্থায়ী খাবারের দোকানও তৈরি করা হয়েছে।”

—নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement