—ফাইল চিত্র
মঞ্চে হাজির জেলা সিপিএমের সম্পাদকমণ্ডলীর ছয় সদস্য। রয়েছেন আরএসপির জেলা সম্পাদকও। কিন্তু তাঁদের বাদ দিয়ে সোমবার খেজুরির হেঁড়িয়ায় বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর সমাবেশে বক্তৃতা করার ‘সুযোগ’ পেলেন দলের দুই যুব নেতা। যা মন কাড়ল দলীয় কর্মীদের। রাজনৈতিক মহলের মতে, দলে নবীন মুখ নেই—এই তকমা ঘোচাতে চাইছে বামেরা।
এ দিন বিকেলে হেঁড়িয়াতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সিপিএমের ডাকে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি এবং নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় একটি সমাবেশ হয়। প্রায় এক দশক আগে ২০১১ সালে ওই এলাকায় সভা করেছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব বসু। তার এতদিন পরে বামেদের কোনও বড় সভা হল হেড়িয়ায়।
সমাবেশে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান এবং জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি ছাড়া বক্তৃতা করার সুযোগ পেলেন দুই যুবনেতা—ইব্রাহিম আলি এবং পরিতোষ পট্টনায়ক। ইব্রাহিম পাঁশকুড়ার (পূর্ব) বিধায়ক। পরিতোষ সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফে’র জেলা সম্পাদক। দু’জনেই অভিযোগ করেন, বাম আমলে পরিকল্পিত নন্দীগ্রামে কেমিক্যাল হাব, গেঁওখালিতে জাহাজ কারখানা, নন্দীগ্রামের জেলিং হ্যাম, হলদিয়ার হাতিবেড়িয়ায় রেলের কোচ কারখানা করতে দেয়নি তৃণমূল। এর ফলে বহু যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থান হয়নি।
সবার শেষে বক্তৃতা করতে গিয়ে ওই দুই যুব নেতাকে সমর্থন জানান বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল এবং বিজেপি যোগসাজশ করেই সরকার চালাচ্ছে। তাঁর দাবি, রাজভবনে মোদী-মমতার বৈঠকের পরে সারদা ও নারদা তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিবিআই আধিকারিকদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ রাজ্যে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি সংক্রান্ত কোনও কাজ করা হবে না বলেও মুখ্যমন্ত্রী তলে তলে সেই করছে বলে অভিযোগ করেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান।
সমাবেশে জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি ছাড়া দুই যুবনেতার বক্তৃতা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সূত্রের খবর, সম্প্রতি পার্টি প্লেনামে যুবদের সামনের সারিতে এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যাতে আগামী দিনে বামপন্থী আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। তার জন্য বয়সের ভারে ন্যুব্জ নেতাদের পরিবর্তে যুবদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য হিমাংশু দাস বলেন, ‘‘আমরা চাই দলের যুবরা এগিয়ে আসুক। তাঁদের নেতত্বে ভবিষ্যতে দল এগিয়ে যাবে। তাই এ দিন আমাদের এই সিদ্ধান্ত।’’