নবান্ন। ফাইল চিত্র
কাজ চেয়ে এ বার পথে নামলেন যুবশ্রীরা। মিছিল হল। সেই মিছিল থেকে স্লোগান উঠল, ‘দিদি, আমরা ভাতা নয়, কাজ চাই’। মঙ্গলবার মেদিনীপুরে মিছিলের পরে কালেক্টরেট মোড়ের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়। জেলাশাসকের দফতরে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে। ‘পশ্চিমবঙ্গ এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্ক কর্মপ্রার্থী সমিতি’র ডাকে এই কর্মসূচি হয়েছে।
সমিতির জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর করণ বলেন, ‘‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল, বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছি। স্মারকলিপিও জমা দিয়েছি।’’ যুবশ্রী প্রকল্পের উপভোক্তাদের নিয়েই এই সংগঠন গড়ে উঠেছে। সমিতির দাবি, আশ্বাস সত্ত্বেও যুবশ্রীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়নি। সরকারি চাকরির সুযোগও মিলছে না।
পশ্চিমবঙ্গে বাম আমলে বেকার ভাতা চালু ছিল। অবশ্য শুধুমাত্র বন্ধ কলকারখানার শ্রমিকেরাই সেই ভাতা পেতেন। ১৯৮৮ সালে চালু হওয়া ওই ভাতার অঙ্ক প্রথমে ছিল মাসে ৫০০ টাকা। পরে বাড়িয়ে দেড় হাজার টাকা করা হয়। রাজ্যে ক্ষমতায় পালাবদলের পরে অবশ্য তাতে দাঁড়ি পড়েনি। পাশাপাশি ২০১৩ সালে চালু হয় যুবশ্রী প্রকল্প। বেকার যুবক- যুবতীদের সরকারি অনুদান দিতে এই প্রকল্প চালু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। যুবশ্রীর অনুদান পাওয়ার ক্ষেত্রে শ্রম দফতর বেশ কিছু শর্ত বেঁধে দিয়েছিল। যেমন, প্রার্থীকে কর্মহীন হতে হবে, নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হতে হবে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ, এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্কে নাম নথিভুক্ত করানোর সময়ে প্রার্থীকে মুচলেকা দিয়ে জানাতে হবে যে তিনি কেন্দ্র বা রাজ্যের কোনও স্বনিযুক্তি প্রকল্পের আর্থিক সহায়তা নেননি। প্রকল্পের উপভোক্তাদের মাসে দেড় হাজার টাকা করে উৎসাহভাতা দেওয়া হয়।
আন্দোলনকারীদের দাবি, প্রকল্প চালুর দিনে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, যুবশ্রী প্রকল্পের উপভোক্তাদের সরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্ক গঠন করে তাঁদের বিভিন্ন সরকারি অফিসে নিয়োগের আশ্বাসও দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে এতদিনেও সেই পদক্ষেপ করা হয়নি। এক আন্দোলনকারীর কথায়, ‘‘রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছিল যে, শিক্ষক থেকে শুরু করে অন্য সরকারি চাকরিতে যুবশ্রীর উপভোক্তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী ধাপে ধাপে নিয়োগ করা হবে। কিন্তু এ ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘সরকার যে অনুদান দেয় সেটা সামান্য। ওই টাকায় কি নিজের পায়ে দাঁড়ানো যায়!’’