মন্দিরের ভিতরে দূরত্ব বিধি মেনে পুজো (বাঁ’দিকে)। প্রবেশপথে স্যানিটাইজ়ার টানেল। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনে বন্ধ হয়েছিল মন্দির। প্রায় তিন মাস পর শনিবার থেকে ফের দর্শনার্থীদের জন্য খুলল তমলুকের ঐতিহ্যবাহী বর্গভীমা মন্দিরের দরজা। সংখ্যায় কম হলেও প্রথম দিন সকাল থেকেই তমলুক শহর-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজিরা ভক্তেরা।
সরকারি নির্দেশিকা মেনে গত ২৪ মার্চ থেকে বর্গভীমা মন্দির দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ করেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। সাময়িক বন্ধ রাখা হয় ভক্তদের ভোগ দেওয়ার রীতি। তবে বাংলা নববর্ষ এবং অক্ষয় তৃতীয়ায় ব্যবসায়ী এবং ভক্তদের জন্য মূল প্রবেশ পথের বাইরে পুজোর ফুল ও সিঁদুর রাখা হয়েছিল। লকডাউন শিথিলের পর রাজ্য সরকার ১ জুন থেকে মন্দির-সহ বিভিন্ন ধর্মীয়স্থান খোলার ছাড়পত্র দেয়। অবশ্য বর্গভীমা মন্দিরের দরজা তখন খোলা হয়নি। এর পরে মন্দির কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মতো এ দিন থেকে মন্দির ভক্তদের জন্য খোলা হয়।
মন্দির কমিটি জানাচ্ছে, প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে ১২টা এবং বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মন্দির খোলার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। করোনার সতর্কতায় পুজো, পুষ্পাঞ্জলি, ভোগ দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম করা হয়েছে। মন্দিরের প্রবেশপথে বসানো হয়েছে স্যানিটাইজ়ার টানেল। মন্দিরের ভিতরে নাট মন্দিরের মেঝেতে আঁকা হয়েছে দূরত্ব-বিধির গোল্লা।
প্রথম দিনেই ভক্তদের কাছ থেকে ভাল সাড়া মিলেছে বলে জানিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। মন্দিরের পরিচালন কমিটির সম্পাদক শিবাজী অধিকারী বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশিকা মেনেই সতর্কতা বিধি মেনে মন্দিরে ভক্তদের প্রবেশ ও পুজো, পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রথম দিনেই ভক্তদের ভাল সাড়া মিলেছে।’’ এ দিন মন্দিরে পুজো দিতে আসা নন্দকুমারের শ্রাবণী দাস বলেন, ‘‘বাড়ির যে কোনও শুভকাজে মন্দিরে পুজো দিতে আসতাম। প্রায় তিনমাস ধরে মন্দির আসা হয়নি। এ দিন এসে খুব ভাল লেগেছে। সামাজিক দূরত্ব মেনে পুজো দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাই ভয় নেই।’’ আর এক ভক্ত অনুকেতা বর্মণ বলেন, ‘‘প্রায়ই মন্দিরে আসতাম। এ দিন এসে পুজো দিলাম।’’
মন্দির খোলায় দর্শনার্থীদের মতো খুশি পুজার সামগ্রী বিক্রি করা ব্যবসায়ীরাও। এক দোকনদার জগাই দাস বলেন, ‘‘অনেকদিন আমরা মায়ের দর্শন পেলাম। দোকানে ব্যবসাও শুরু করতে পারলাম। তাই খুবই ভাল লাগছে।’’