—প্রতীকী চিত্র।
সপ্তাহ দুয়েক আগে চণ্ডীপুর থানার কোটবাড় ও নন্দীগ্রাম থানার বনশ্রীগৌরি গ্রামের দুই গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। দুই ক্ষেত্রেই খুনের অভিযোগ শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। কোটবাড় গ্রামের রুবিনা বিবির বাপের বাড়ির অভিযোগ, অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটি স্বামীর কথা মতো গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে রাজি না হওয়ায় অ্যাসিড খাইয়ে তাঁকে খুন করে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। বনশ্রীগৌরি গ্রামে আনসুরা বিবি অগ্নিদ্বগ্ধ হন। তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তির পাঁচ দিন পর তাঁর মৃত্যু হয়। বাপের বাড়ির অভিযোগ, আনসুরার দুই মেয়ে হয়েছিল এবং তাদের রং ছিল কালো— এই বলে তাঁকে অপমান ও অত্যাচার করত শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। তারাই তাঁকে মেরে ফেলেছে।
এই দুই ঘটনায় পুলিশের তরফে আইনি ব্যবস্থার পাশাপাশি নড়েচড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন। স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবে, পূর্ব মেদিনীপুরে ১০০০ পুরুষ পিছু মহিলার সংখ্যা ৯৪৩ জন, যা রাজ্যের গড় অনুপাত ১০০০:৯৫০-এর তুলনায় কম। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘বেটি বাঁচাও’ কর্মসূচিতে সাধারণকে সচেতন করতে সোমবার কর্মশালার আয়োজন করে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। এ দিন কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উপনগরীর বলাকা মঞ্চে কর্মশালায় ছিলেন পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, কর্মাধ্যক্ষ, বিডিও, স্বাস্থ্য কর্মীরা। বক্তব্য পেশ করেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি মধুরিমা মণ্ডল, জেলাশাসক রশ্মি কমল, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল, জেলা পরিষদের শিশু-নারী উন্নয়ন কর্মাধ্যক্ষ অপর্ণা ভট্টাচার্য, স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম দাস। নিতাইবাবুর কথায়, “কন্যাভ্রূণ নষ্ট, মেয়েদের প্রতি অবহেলা ও অত্যাচার সামাজিক সমস্যা। এ সব রুখতে সচেতনতা জরুরি। তাই কর্মশালা।”
তিনি আরও জানান, জেলার নার্সিংহোম ও ডায়গনস্টিক সেন্টারগুলির উপর প্রশাসনিক নজরদারি কমিটি রয়েছে। কন্যাভ্রূণ নষ্টের মতো ঘটনা রুখতে পুলিশের সাহায্য নেওয়া হবে। সে জন্য মহকুমা ও ব্লকস্তরে এবং বিভিন্ন কলেজে কর্মশালা হবে। অপর্ণাদেবী বলেন, “কন্যাভ্রূণ নষ্ট ও গর্ভপাত করানোর মতো ঘটনা রুখতে নার্সিংহোম ও ডায়গনিস্টিক সেন্টারগুলিকে সতর্ক করা হবে। অভিযোগ পেলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”