শয্যায় জায়গা হয়নি। মহিলা ওয়ার্ডের এক কোণে মাটিতেই শুয়েছিলেন এক রোগিণী। পাশেই শৌচাগার। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পরিদর্শনে এসে এমন ছবি দেখে অসন্তুষ্ট হলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) মধুসূদন চট্টোপাধ্যায়। ওই ওয়ার্ডের এক নার্সকে ডেকে ধমকও দেন মধূসুদনবাবু। নার্সের উদ্দেশে মধুসূদনবাবুর প্রশ্ন, ‘ওই মহিলা আপনার বাড়ির কেউ হলে এ ভাবে রাখতেন তো?’ ওই নার্সের থেকে অবশ্য কোনও উত্তর পাননি তিনি।
শুধু মেঝেতে রোগিণীর শুয়ে থাকাই নয়। ওয়ার্ডের একাংশ শয্যায় বেডকভার নেই দেখেও বিরক্ত হন মধুসূদনবাবু। নার্সকে বলে যান, ‘সব শয্যায় যেন বেড কভার থাকে। পরের বার এসে যেন একই পরিস্থিতি দেখতে না- হয়।’
মঙ্গলবার রাতে আচমকা মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পরিদর্শনে আসেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) মধুসূদনবাবু। জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনার নির্দেশে তাঁর এই পরিদর্শন। মেডিক্যালের নতুন ভবনের একাধিক ওয়ার্ডে যান তিনি। রাতের হাসপাতাল চত্বরও ঘুরে দেখেন। মধুসূদনবাবু অবশ্য এই পরিদর্শন নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। তাঁর কথায়, “হাসপাতালে গিয়েছিলাম। যা দেখার দেখে এসেছি। যা বলার বলে এসেছি।” পর্যাপ্ত বেড কভার কি হাসপাতালে নেই? না- হলে সব শয্যায় বেড কভার থাকবে না কেন? সদুত্তর এড়িয়ে হাসপাতাল সুপার তন্ময় পাঁজা বলেন, “ঠিক কি হয়েছে দেখছি!”
মাস খানেক আগেই বিধায়ক মৃগেন মাইতির বদলে মেদিনীপুর মেডিক্যালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হয়েছেন জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা। এরপর থেকেই হাসপাতালে শুরু হয়েছে আচমকা পরিদর্শন। মধুসূদনবাবু গত দেড় সপ্তাহে এই নিয়ে তিনবার হাসপাতালে এলেন। হাসপাতালের এক কর্তা বলছিলেন, “সব দিকেই বাড়তি নজর রাখতে হচ্ছে! এখন ঘনঘন পরিদর্শন হচ্ছে। কখনও দুপুরে, কখনও রাতে পরিদর্শকেরা আসছেন। একটু বেচাল হলেই তো মুশকিল!”
হাসপাতালের এক সূত্রে খবর, মঙ্গলবার একাধিক নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন মধুসূদনবাবু। যেমন হাসপাতাল চত্বরে কিছু এলাকায় আলো কম রয়েছে। ওই সব এলাকায় পর্যাপ্ত আলো লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, হাসপাতালের সমস্ত শৌচাগার ও ওয়ার্ডের আশপাশের এলাকা আরও পরিষ্কার রাখার কথাও বলেছেন। পরিষেবার উন্নতির দিকে আরও বেশি নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। হাসপাতালের এক কর্তার আশ্বাস, “উনি গুরুত্বপূর্ণ কিছু নির্দেশ-পরামর্শ দিয়েছেন। দ্রুত সব কার্যকর করা হবে।”