প্রতীকী চিত্র।
খাস জমিতেই দীর্ঘদিন বসবাস। রয়েছে ভোটার কার্ড। কিন্তু নেই পুরসভার হোল্ডিং নম্বর। এর জেরে পুর পরিষেবা থেকে বঞ্চিত কয়েক হাজার মানুষ। এ বার পুরভোটের আগে খাসজমিতে বসবাসকারী পরিবারগুলিকে হোল্ডিং নম্বর দিতে উদ্যোগী হল পুরসভা। খড়্গপুর পুরসভার পক্ষ থেকে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যেই পুরসভার শেষ বোর্ড মিটিংয়ে খাসজমিতে বসবাসকারী পরিবারগুলিকে হোল্ডিং নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। মূলত কীভাবে খাস জমিতে বসবাসকারী ভোটারদের পুর পরিষেবা প্রদান করা যায় সেই ভাবনা থেকেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে। একইসঙ্গে হোল্ডিং নম্বর দেওয়া হলে পুরসভার রাজস্ব বাবদ আয় বৃদ্ধিও হবে বলে দাবি পুর কর্তৃপক্ষের। এ ক্ষেত্রে জমির চরিত্র না বদলে শুধুমাত্র পরিষেবা দিতে এমন হোল্ডিং নম্বর দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। আবেদনের ভিত্তিতে হোল্ডিং নম্বর দেওয়া হবে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। অবশ্য পুরসভা নির্বাচনের আগে এমন সিদ্ধান্তে শোরগোল পড়েছে শহরে।
এখন শহরের বিষ্ণরঞ্জননগর, কৌশল্যা খাসপাড়া, ইন্দা খাসপাড়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় খাস জমিতে কয়েক হাজার মানুষের বাস। দীর্ঘবছর ধরে এই এলাকার পরিবারগুলি খাস জমিতেই পাকা বাড়িও গড়ে তুলেছে। অথচ এই বাড়িগুলি থেকে কোনও পুরকর পায় না পুরসভা। এমনকি, জলের সংযোগও দেওয়া যায় না। এর পিছনে পুরসভার হোল্ডিং নম্বর না থাকা সবচেয়ে বড় কারণ। এর ফলে একদিকে যেমন পুরসভার আয় কম হচ্ছে তেমন নানা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ওই এলাকার বাসিন্দারা। মিলছে না ব্যাঙ্কের ঋণ থেকে ব্যবসার লাইসেন্স। তাই বহুবার পুরসভার কাছে এই পরিবারগুলি দরবার করেছে। তবে সুফল মেলেনি। এ বার অবশ্য সুফল পেতে চলেছে ওইসব এলাকার বাসিন্দারা।
তবে জমির চরিত্র না বদল হওয়ায় স্থায়ী হোল্ডিং নম্বর পাচ্ছেন না ওই পরিবারগুলি। শুধুমাত্র একটি করে অস্থায়ী হোল্ডিং নম্বর দেওয়া হবে। পুরপ্রধান তথা বিধায়ক প্রদীপ সরকার বলেন, “দীর্ঘ বছর ধরে শহরের বহু মানুষ ভোটার হলেও খাস জমিতে বসবাস করায় পরিষেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করছে। আমাদের কাছে হোল্ডিং নম্বর দেওয়ার প্রস্তাব আসছিল। তাই আমরা অস্থায়ী হোল্ডিং নম্বর এ বার প্রদান করব বলে সিদ্ধান্ত নিলাম। ওই জমি খাস থাকবে। প্রয়োজনে শুনানি করে অস্থায়ী হোল্ডিং নম্বর বাতিল করা হবে।”
পুরসভা নির্বাচনের আগে এখন থেকেই শহরবাসী এই সুবিধা পাবেন। এর জন্য কাউন্সিলরদের তাঁদের এলাকায় খাস জমিতে বসবাসকারীদের মধ্যে বিষয়টি প্রচার করতে বলা হয়েছে। এর পরে ওই পরিবারগুলি আবেদন করলে জমির চরিত্র খতিয়ে দেখে ওই হোল্ডিং নম্বর দেওয়া হবে। ভোটের আগে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা চমক দিতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করছে বিরোধীরা। বিজেপির শহর সংযোজক গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, “শহরের এমন বাস্তব সমস্যায় পুরসভার এতদিন পরে হুঁশ ফেরায় সাধুবাদ জানাই। আমাদের মনে হচ্ছে এটা পুরভোটকে সামনে রেখে চমক দিচ্ছে পুরসভা। কারণ দীর্ঘবছরের সমস্যা নিয়ে এতদিন কেন ভাবল না ওঁরা। তবে মানুষের সমস্যা সমাধান হোক এটাই চাইছি।”