—ফাইল চিত্র।
আন্দোলনের আগের সেই ঝাঁঝ উধাও। এ বার জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিরা যা দাবি জানালেন তা মোটামুটি এরকম—তৈরি করে দিতে হবে রাস্তাঘাট, আরও গাছ লাগাতে হবে, পরিবেশ দূষণ নিয়ে যাঁদের মধ্যে এখনও আশঙ্কা রয়েছে তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে হবে।
মঙ্গলবার চন্দ্রকোনা রোডের বিদ্যাসাগর মঞ্চে ‘আলোর পথে’ শীর্ষক একটি সভায় উপস্থিত হন জেলাশাসক রশ্মি কমল। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে ওই সভা। নির্মীয়মাণ পাওয়ার গ্রিড এলাকার যেসব বাসিন্দারা মাঝেমধ্যেই গ্রিডের কার্যকলাপ নিয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁদের কয়েকজনকে ওই সভায় ডাকা হয়। কিছুদিন আগে সাঁইনারা, বুরামারা গ্রামের বিক্ষোভকারীরা মেদিনীপুরে গিয়ে জেলাশাসকের কাছে পাওয়ার গ্রিড নিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানিয়ে এসেছিলেন। অভিযোগ ছিল, পাওয়ার গ্রিড হলে এলাকায় পরিবেশ দূষণ হবে। সবুজ ধবংস করে পাওয়ার গ্রিডের কাজ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁরা। জেলাশাসক তখনই তাঁদের জানিয়েছিলেন, চন্দ্রকোনা রোডে গিয়ে বিশেষজ্ঞদের এনে সকলের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। সবুজ ধ্বংস হলে গাছও লাগিয়ে দেওয়া হবে। সেই মতো এ দিন গড়বেতা ৩ ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিক্ষোভকারী সহ এলাকার বাসিন্দাদের ডাকা হয়েছিল জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলতে। জেলাশাসক রশ্মি কমল তাঁদের কথা শোনেন, পরামর্শ দেন। সভায় আইআইটি’র বিশেষজ্ঞেরা বক্তৃতা করেন। ছিলেন সদর মহকুমাশাসক দীননারায়ণ ঘোষ, বিডিও অভিজিৎ চৌধুরী, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আকাশদীপ সিংহ প্রমুখ।
এ দিনের সভার পর জেলাশাসক বলেন, ‘‘আলোচনা হয়েছে। টুকটাক যা কিছু রয়েছে, তা আলোচনার মাধ্যমেই মিটিয়ে নেওয়া হবে।’’ সাঁইনারা গ্রামের বাসিন্দা অসিত ঘোষ ও সত্যসাধন ঘোষ বলেন, ‘‘জেলাশাসককে আমাদের কথা আগেও বলেছি, এ দিনও বললাম, উনি বলেছেন অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’’
জেলাশাসক পাওয়ার গ্রিড এলাকার নেপুরা বিজলীরাণী উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি ল্যাবরেটরি গৃহ নির্মাণ ও পরিস্রুত পানীয় জল প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। দ্বারিগেড়িয়া গ্রামীণ হাসপাতালে জেনারেটর, ডিজিট্যাল এক্স রে মেশিনের উদবোধন করেন জেলাশাসক। স্কুলের কাজ গুলি তাঁরা করে দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার পিনাকী দত্ত। এ দিন জেলাশাসক চন্দ্রকোনা রোডে প্রস্তাবিত দমকল কেন্দ্রের জমিও পরিদর্শন করেন।
পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনে বারেবারে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল চন্দ্রকোনা রোড এলাকা। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে তাঁদের আশ্বস্ত করার ক্ষেত্রে চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি প্রশাসন। এ বার সরাসরি আলোচনায় বসলেন জেলাশাসক। একই সঙ্গে শুরু হল উন্নয়নমূলক কাজে গতি আনার চেষ্টা।