প্রতীকী ছবি
মহকুমা শাসকের অফিসের গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ।
প্রথমে ভুয়ো তথ্য দিয়ে জোগাড় করা হয়েছিল কুপন। সেই কুপন দেখিয়ে রেশন দোকান থেকে চাল আর ছোলাও নেওয়া হয়েছিল। এরপরই ছড়িয়ে পড়ে খবর— ঘাটালের মহকুমা অফিসের গাড়ির চালক শ্রীমন্ত মাইতি পরিযায়ী শ্রমিক না হয়েও কুপনের মাধ্যমে সরকারি খাদ্য সামগ্রী সংগ্রহ করেছেন। প্রশাসনের অন্দরে শুরু হয় শোরগোল। বিষয়টি কানে আসতেই তড়িঘড়ি মহকুমা শাসক অসীম পাল ওই সরকারি খাদ্য সামগ্রী রেশন দোকানে ফেরতের ব্যবস্থা করেন। তবে এখনও অবধি ওই যুবকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ হয়নি। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে শাসক দল তৃণমূল-সহ সিপিএম, বিজেপি সবপক্ষই।
সম্প্রতি পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য রাজ্য সরকার মাথা পিছু ১০ কিলোগ্রাম করে চাল এবং এক কিলোগ্রাম করে ছোলা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। নিয়ম হল, যাঁদের ডিজিটাল রেশন কার্ড নেই, তাঁরাই ওই সুবিধা পাবেন। পুরসভা এলাকায় বসবাসকারী পরিযায়ী শ্রমিকদের কুপন দেওয়া হয়েছে মহকুমা শাসকের অফিস থেকে। আর পঞ্চায়েত এলাকায় বসবাসকারী পরিযায়ী শ্রমিকদের কুপন দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট ব্লক অফিস থেকে। শ্রীমন্তের বাড়ি দাসপুর-১ ব্লকের সামাট লাগোয়া হোসেনপুর গ্রামে। প্রশাসনের এক সূত্রের খবর, শনিবার দাসপুর-১ ব্লকের সামাট এলাকায় এক রেশন দোকান থেকে শ্রীমন্ত সাতটি কুপন দেখিয়ে মোট ৩ কুইন্টাল ৯০ কিলোগ্রাম চাল এবং ১১ কিলোগ্রাম ছোলা সংগ্রহ করেন। সাতটি কুপনে দু’টি পরিবারের ৩৯ জন সদস্যের কথা উল্লেখ ছিল।
স্থানীয় সূত্রের খবর, শ্রীমন্তের পরিবারের কেউই পরিযায়ী শ্রমিক নন। সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে, শ্রীমন্ত কীভাবে ওই কুপন সংগ্রহ করলেন। বিশেষ করে অনেকেই যেখানে ফুড কুপন পাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠছে! শ্রীমন্তের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। প্রতিবারই তাঁর ফোন সুইচড অফ ছিল। দাসপুর-১ বিডিও বিকাশ নস্কর বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। তবে আমার অফিস থেকে ওই কুপন দেওয়া হয়নি।” ঘাটালের মহকুমা খাদ্য আধিকারিক পিটার বর বলেন, “কুপনের কথা কিছু জানি না।” আর যাঁর গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সেই ঘাটালের মহকুমা শাসক অসীম পাল বলেন, “ওই কুপন ভুয়ো। কী ভাবে ওই চালক কুপন পেলেন, তার তদন্ত শুরু হয়েছে।”
রেশন ডিলার নারায়ন মণ্ডল জানিয়েছেন, কুপন পেয়ে তিনি চাল দিয়েছিলেন। সেই চাল ও ছোলা তিনি ফেরতও পেয়ে গিয়েছেন। তবে এই ঘটনাটি ঘিরে সরব হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। তৃণমূলের দাসপুর-১ ব্লক সভাপতি সুকুমার পাত্র বলেন, “কী ভাবে কুপন পেলেন ওই যুবক, বিডিওর কাছে জানতে চেয়েছি।” সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য গুনধর বসু বলেন, “আমরা চাই এর সঠিক তদন্ত হোক।” বিজেপির ঘাটাল জেলা সভাপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “সর্ষের মধ্যেই ভূত রয়েছে।তদন্ত হলেই পরিষ্কার হবে।”