অপেক্ষা: ননীবালা স্কুলের হস্টেল মাঠে বসে রয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
ঝাড়গ্রাম জেলায় আটকে থাকা ভিন্ জেলা ও ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকদের ঘরে ফেরানো শুরু হয়েছে। একইভাবে ভিন্ জেলা ও রাজ্যে আটকে থাকা ঝাড়গ্রামের পড়ুয়া ও শ্রমিকরাও নিজেদের জেলায় ফিরতে শুরু করেছেন। এখনও অবধি গ্রিন জোন হিসেবে চিহ্নিত ঝাড়গ্রাম এরপরে কতটা সবুজ থাকবে তা নিয়ে চিন্তিত চিকিৎসকেরা।
কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েও চিকিৎসক মহলের একাংশের বক্তব্য, যাঁরা ভিন্ রাজ্য ও জেলায় আটকে আছেন তাঁদের লকডাউন শুরুর আগে ফেরানো হলে ভাল হতো। এখন রেড অথবা অরেঞ্জ জোন থেকে লোকজন এই জেলায় ঢুকলে সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। শঙ্কা বাড়ছে প্রশাসনের অন্দরেও। যদিও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করোনা নিয়ন্ত্রণের উপযুক্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ঘরে ফেরানোর কর্মসূচি শুরু হয়েছে।’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, লকডাউনের মধ্যে ভিন্ জেলা ও ভিন্ রাজ্যের প্রায় আড়াই হাজার বাসিন্দা ঝাড়গ্রাম জেলায় আটকে ছিলেন। গত শুক্রবার থেকে তাঁদের ফেরানো শুরু হয়েছে। ওই দিন বিনপুরের হাড়দায় আটকে থাকা ৬২ জন শ্রমিক পুরুলিয়ায় ফিরে গিয়েছেন। ঝাড়গ্রামে আটকে থাকা রাজস্থানের ৫ জন শ্রমিককেও শুক্রবার ফেরানো হয়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলার যে সব বাসিন্দা ভিন্ জেলা ও রাজ্যে আটকে আছেন, তাঁরা দু’এক দিনের মধ্যেই জেলায় ফিরবেন। ইতিমধ্যেই শনিবার সকালে রাজস্থান থেকে ১২ জন পড়ুয়া জেলায় ফিরে এসেছেন।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, রবিবার দুপুরে ঝাড়গ্রাম শহর ও নয়াগ্রাম ব্লক থেকে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার ৭টি বাসে ২৬৮ জন শ্রমিক মুর্শিদাবাদ ও বীরভূম জেলার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। বেলপাহাড়ি ও লালগড় এলাকা থেকে আরও ২১৬ জন শ্রমিককে ৫টি বেসরকারি বাসে পুরুলিয়ায় ফেরানো হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধির কারণে প্রতিটি বাসে ৪৫ জন করে যাত্রী তোলা হয়। এ দিন ঝাড়গ্রাম শহরের ননীবালা গার্লস স্কুলের মাঠ থেকে একটি সরকারি বাসে মুর্শিদাবাদ জেলার ৪৫ জন শ্রমিককে ফেরানো হয়। নয়াগ্রামে ব্লকের খড়িকামাথানি চক থেকেও ছ’টি সরকারি বাসে ২২৩ জন শ্রমিককে ফেরানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৬ জন বীরভূমের মুরারই এলাকার বাসিন্দা। বাকিদের বাড়ি মুর্শিদাবাদে। এ দিনই জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ও জেলার ইটভাটা মালিকদের উদ্যোগে বেলপাহাড়ি ব্লকের ডাঙরপাড়ায় আটকে থাকা ৬৩ জন ও লালগড় ব্লকের বেলাটিকরিতে আটকে থাকা ১৫৩ জন ইটভাটা শ্রমিককে ৫টি বেসরকারি বাসে পুরুলিয়ায় ফেরানো হয়েছে।
ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী ঝাড়গ্রাম জেলায় আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ঘরে ফেরানো শুরু হয়েছে। ভিন্ জেলা ও রাজ্যে আটকে থাকাদের ফেরানোর ব্যাপারে যা নির্দেশ আসবে সেই মতো পদক্ষেপ হবে।’’