বাড়তি দোকান বন্ধই
West Bengal Lockdown

সবুজ জেলায় পথে ভিড়, দিনভর বিভ্রান্তিতে চলল না বাস

রবিবার সন্ধ্যায় প্রচার গাড়ি বের করেছিল ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসন। সেখান থেকে সোমবার অতিরিক্ত কোনও দোকান খোলা যাবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম ও মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২০ ০৩:২৯
Share:

লোকারণ্য: তৃতীয় দফার লকডাউনের প্রথম দিন। সোমবার সকাল ১১টায় ঝাড়গ্রাম শিবমন্দির মোড় এলাকার ছবি ছিল এমনই। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

কোন দোকান খোলা যাবে আর কোন দোকান যাবে না— সেই নিয়ে দিনভর বিভ্রান্তি চলল গ্রিন জ়োন ঝাড়গ্রাম জেলায়। রাতে এল নতুন নির্দেশিকা।

Advertisement

কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী, সোমবার থেকে গ্রিন জ়োনে চা, পান, মোবাইল রিচার্জ, লন্ড্রি, বই, রং, হার্ডওয়্যারের দোকান খোলার কথা ছিল। ওই জ়োনে স্টিল, আয়রন স্টিল, নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত কারখানা খুলতেও বলা হয়েছিল। তবে ঝাড়গ্রাম জেলায় এ দিন সেটা হয়নি। গ্রিন জ়োনে বাস চলার কথা থাকলেও ঝাড়গ্রামের রাস্তায় যাত্রীবাহী বাস দেখা যায়নি। ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন রুটে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন বাস চলে। সেগুলি পথে নামেনি এ দিন। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতি বলেন , ‘‘শর্ত মেনে বাস নামাতে গেলে বিপুল ক্ষতি হবে।’’

রবিবার সন্ধ্যায় প্রচার গাড়ি বের করেছিল ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসন। সেখান থেকে সোমবার অতিরিক্ত কোনও দোকান খোলা যাবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। তবে অধিকাংশ মানুষের কাছেই সেই বার্তা পৌঁছয়নি। ফলে এ দিন সকাল থেকেই রাস্তায় ভিড় ছিল বেশি। ঝাড়গ্রাম শহরে চা, পান, ফোন রিচার্জ, নির্মাণ সামগ্রীর দোকান খোলে। জুবিলি বাজারে পোশাকের দোকানে বেচাকেনা হয়। চলে টোটো। পরে পুলিশ গিয়ে জরুরি পরিষেবা বাদে অন্য দোকানগুলি বন্ধ করে দেয়।

Advertisement

ঝাড়গ্রাম পাঁচমাথায় একটি দোকান বন্ধ করছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র

বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকের পরে রাতে নতুন নির্দেশিকা আসে ঝাড়গ্রাম জেলায়। সেখানে গ্রিন জ়োনে নতুন কী কী দোকান ও পরিষেবা চালু করা যাবে তা জানানো হয়েছে। জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘রাতে নতুন নির্দেশিকা এসে পৌঁছেছে। সেই মতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

মদের দোকান (অফ শপ) খোলা নিয়েও সোমবার দিনভর টানাপড়েন চলে ঝাড়গ্রামে। সূত্রের খবর, আবগারি দফতর শুরুতে সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শহরের মদের দোকানগুলি খুলে রাখতে বলেছিল। সোমবার আবার জানানো হয়, দুপুর ৩টে থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দোকান খোলা যাবে। সেই মতো এ দিন বিকাল ৩টেয় কয়েকটি মদের দোকান খোলে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে সেগুলি বন্ধ করে দিতে বলা হয়। এরপর নবান্ন থেকে রাজ্যের আবগারি কমিশনারের জারি করা নির্দেশিকা আসে। তাতে জানানো হয়, খুচরো মদের দোকান দুপুর ১২ টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা যাবে। তবে ক্রেতা পিছু দু’বোতলের বেশি মদ বিক্রি করা যাবে না। কোনও ক্রেতা মাস্ক পরে না এলে তাঁকে মদ বিক্রি করা চলবে না। তারপর ঝাড়গ্রাম শহরের প্রান্তিক এলাকা জামদায় একটি মদের দোকান খুলতে দেখা যায়।

পশ্চিম মেদিনীপুরে মদের হোম ডেলিভারি শুরু হয়েছিল। সোমবার সকালে এই জেলার বেশ কয়েকটি মদের দোকান খোলে। সেখানে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। বেশ কিছু দোকানের সামনে সামাজিক দূরত্ব মানা হয়নি। পরে জেলা আবগারি দফতরের দল পরিদর্শনে বেরোয়। ছিলেন জেলার আবগারি সুপার একলব্য চক্রবর্তী। দোকানগুলিকে সতর্ক করা হয়।

এ দিন ফুড কুপনের জন্য দীর্ঘ লাইন চোখে পড়েছে দুই জেলায়। ফুড কুপন দেওয়ার দাবিতে সোমবার জেলা পশ্চিম মেদিনীপুর খাদ্য দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখান শতাধিক মানুষ। তাঁরা সকলেই মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা। অভিযোগ, তাঁরা নতুন রেশন কার্ড আবেদন করেও পাননি। এখনও নতুন রেশন কার্ড পাননি। ফুড কুপনও পাননি। জেলা কংগ্রেস সভাপতি সৌমেন খান বলেন, ‘‘অবিলম্বে ওঁদের কুপন ও মাসে পাঁচ কেজি করে চাল পাওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত।’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement