সামাজিক দূরত্বের বিধি ভেঙেই নন্দকুমারে মদের দোকানে লাইন, সোমবার (উপরে)। ময়নায় মদের দোকান খোলার প্রতিবাদে পথে মহিলারা। নিজস্ব চিত্র
করোনা মোকাবিলায় লকডাউনের জেরে মদের দোকান বন্ধ থাকায় বেজায় বিপাকে পড়েছিলেন সুরাপ্রেমীরা। রাজ্য সরকারের নির্দেশের প্রেক্ষিতে এ বার মুখে হাসি ফুটতে চলেছে সুরাপ্রেমীদের মুখে।
রাজ্য সরকারের তরফে প্রথমে মদের দোকান খোলায় সায় না দেওয়া হলেও হোম ডেলিভারি বা ক্রেতাদের কাছে অর্ডার নিয়ে বাড়িতে মদ পৌঁছে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এলাকায় গোলমালের আশঙ্কায় অধিকাংশ দোকানদার সেই ঝুঁকি নেননি বলে অভিযোগ। শেষপর্যন্ত রাজ্য সরকার নির্দিষ্ট সময় বেঁধে ও সামাজিক দূরত্ব মেনে সোমবার থেকে মদ দোকান খোলার অনুমতি দিয়েছে।
এদিন সকাল থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমার বাজার, ব্যবত্তারহাট, তমলুক শহর-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় সরকার অনুমোদিত মদের দোকানের সামনে ভিড় জমে যায়। সকাল ১০টা থেকে দোকান খোলার আগেই দোকানের সামনে লম্বা লাইন পড়ে যায়। নন্দকুমার বাজারে মদের দোকানের সামনে করোনা সতর্কতা বিধিমত সামাজিক দূরত্বের তোয়াক্কা না করেই ক্রেতাদের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ভিড় হটিয়ে দেয়। ঘটনার জেরে এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়। গোলমাল পাকানোর অভিযোগে পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। লকডাউনের নিয়মভঙ্গ করার অভিযোগে মদের দোকানের ম্যানেজারকে আটক করা হয়।
তবে অন্য ছবিও দেখা গিয়েছে এ দিন। ময়না বাজারে সরকার অনুমোদিত একটি মদের দোকান খোলার প্রতিবাদে এলাকার মহিলা-সহ বেশ কিছু বাসিন্দা প্ল্যাকার্ড হাতে দোকানের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, লকডাউনের জেরে কাজ হারিয়ে মানুষ খাবার এবং চিকিৎসার ওষুধের জোগান পেতে সমস্যায় পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মদের দোকান খোলা হলে এলাকায় মদ্যপদের উপদ্রব ও বহু পরিবারে অশান্তি বাড়বে। মদের দোকান বন্ধের দাবি তুলে বেশ কিছুক্ষণ ধরে এই বিক্ষোভ চলার পর ময়না থানার পুলিশের আশ্বাসে বিক্ষোভ বন্ধ হয়। রবিবার সন্ধ্যায় ময়নার খেজুরতলা বাজারে একটি সরকারি মদের দোকানের মালিক ও এক কর্মী লুকিয়ে বেশ কিছু মদের বোতল মোটরসাইকেল পূর্ব দোবান্দি গ্রামে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করছিলেন বলে অভিযোগ। দোকানের মালিক ও কর্মীকে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখায় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে ময়নার থানার পুলিশবাহিনী সেখানে গেলে পুলিশকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখায় বাসিন্দারা। পরে বাসিন্দাদের আশ্বাস দিয়ে দোকানের মালিক ও কর্মীকে উদ্ধার করে পুলিশ।
পূর্ব মেদিনীপুর আবগারি লাইসেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশিকা মেনেই মদের দোকান খোলার ব্যবস্থা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলা হবে।’’ আবগারি দফতরের জেলা আধিকারিক যতন মণ্ডল বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ মেনে করোনা সতর্কতা বিধি পালন করে মদের দোকান খোলার জন্য বলা হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দোকান খোলার বিষয়ে আগে জানানো হয়েছিল। তবে পরে সময় পরিবর্তন করে বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলার কথা বলা হয়েছে। সকালে নন্দকুমারে মদের দোকানের সামনে গোলমাল হওয়ায় দোকান বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। ময়নায় বিক্ষোভের ঘটনা নজরে এসেছে। দোকান খোলায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার জন্য পুলিশকে জানানো হয়েছে।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)