প্রতীকী ছবি
গত মাসে রেশন বিলি নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে বিক্ষিপ্ত অশান্তি হয়েছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কয়েকজন রেশন ডিলারকে সাসপেন্ড, শোকজ়ও করতে হয়েছে। এ মাসেও অশান্তির আশঙ্কা রয়েছে। সব দেখে নড়েচড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে রেশন ব্যবস্থায় নজরদারি আরও বাড়ানো হচ্ছে। শুধু ব্লক থেকে নয়, ব্লকে পরিদর্শন হবে জেলা থেকেও, নির্দেশ জেলাশাসক রশ্মি কমলের। জেলা থেকে ব্লকে নজরদারিতে যাবেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটরা। তাঁরা ‘পরিদর্শক’ হিসেবে কাজ করবেন।
পশ্চিম মেদিনীপুরে ২১টি ব্লক এবং ৭টি পুরসভা রয়েছে। সব মিলিয়ে ২৮ জন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ‘পরিদর্শক’ হিসেবে কাজ করবেন। সকলকে এক- একটি করে ব্লক কিংবা পুরসভার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে জেলা থেকে এই পরিদর্শন শুরুও হয়েছে। পরিদর্শনে রেশন ব্যবস্থা ঠিকঠাক চলছে কি না তা যেমন দেখা হবে, তেমন খাদ্যশস্যের মানও দেখা হবে। পাশাপাশি রেশন দোকানে যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে, সেই দিকটিও নিশ্চিত করা হবে। ওই সূত্রে খবর, রেশন বিলি নিয়ে সম্প্রতি জেলাস্তরে এক বৈঠক হয়েছে। ছিলেন জেলাশাসক রশ্মি কমল, জেলা খাদ্য নিয়ামক সুকোমল পণ্ডিত প্রমুখ। এর আগে ব্লকগুলির সঙ্গেও জেলার ভিডিয়ো- বৈঠক হয়েছে। এরপরই জেলা থেকে ‘পরিদর্শক’ পাঠানোর ওই পদক্ষেপ করা হয়েছে। জেলার খাদ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সরকারি নির্ধারিত যতটা জিনিস পাওয়ার কথা, রেশন থেকে গ্রাহকেরা তা পাচ্ছেন কি না সে দিকে কড়া নজর রাখা হয়েছে। অনিয়ম নজরে এলেই সংশ্লিষ্ট ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
গত মাসে রেশন বিলি নিয়ে জেলার কয়েকটি এলাকায় অশান্তি হয়েছে। ওই এলাকাগুলিতে রেশনে বেনিয়ম বা দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। কোথাও পরিমাণে অনেকটা কম দেওয়া হচ্ছিল খাদ্যশস্য। কোথাও খাদ্যশস্যের গুণগত মান খুবই খারাপ থাকছিল। রেশন নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও অব্যাহত। বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশের দাবি, ‘‘রেশন লুট হচ্ছে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির পাল্টা দাবি, ‘‘বিজেপি শুধু মিথ্যাচার করছে।’’ জেলা খাদ্য দফতরের এক সূত্রে খবর, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলায় ২২ জন ডিলারকে শোকজ করা হয়েছে, ৮ জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে, ৩ জনকে ধরেছে পুলিশ।
সূত্রের খবর, এ বার দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে সরাসরি সংশ্লিষ্ট ডিলারের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হতে পারে। ইতিমধ্যে ডিলারদের কাছে স্পষ্ট বার্তা পাঠানো হয়েছে যে, যাঁর যতটা প্রাপ্য, তাঁকে ততটা খাদ্যসামগ্রী দিতে হবে। রেশন ব্যবস্থার উপরে কড়া নজর রাখা যে প্রয়োজন, সেটা উপলব্ধি করেছে জেলা প্রশাসন। রেশনের চাল, গম সহ সব পণ্যের মান পরীক্ষা, বণ্টন ব্যবস্থার উপরে নজর রাখার কথা ইন্সপেক্টর, সাব- ইন্সপেক্টরদের। সেই নজরদারির পাশাপাশি এ বার জেলা থেকেও নজরদারি শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পরিদর্শনে সবকিছুই খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে। কোনও বিষয়ে ডিলার যুতসই জবাব দিতে না পারলে উপযুক্ত পদক্ষেপই করা হচ্ছে।’’