—প্রতীকী ছবি।
কী জনসভায়, কী মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় মেধা তালিকায় উত্তীর্ণদের সংবধর্নায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বারই বলেছেন রাজ্য প্রশাসন পরিচালনায় আমলা-অফিসারের অভাবের কথা। ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ দিয়েছেন প্রথাগত পড়াশোনা শেষ করে আইএএস, আইপিএস কিংবা ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে। পাশাপাশি সর্ব ভারতীয় আইএএস, আইপিএস পরীক্ষায় বাঙালি ছাত্রছাত্রীদের কম অংশগ্রহণ নিয়ে সরবও হয়েছেন বার বার।
এ বার খোদ জেলাতেই আমলা তৈরির কাজ শুরু করে দিলেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। রবিবার হলদিয়ার মহকুমা শাসকের দফতরে এই বিষয়ে এক কর্মশালাও আয়োজন করা হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য প্রশাসনের সবচেয়ে ‘কুলীন’ চাকরির প্রতি আগের তুলনায় যুবক-যুবতীর মধ্যে আগ্রহ বেড়েছে। শিল্প ও বন্দর শহর হওয়ার সুবাদে হলদিয়ায় অন্য পেশার দিকে বেকার তরুণ-তরুণীদের স্বাভাবিক আকর্ষণ থাকত। এ বার সরকারি উচ্চ পদে চাকরিতে আগ্রহী যুবক-যুবতীদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাঁদের আমলা তৈরি করতে উদ্যোগী হল জেলা প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, এ রাজ্যে আমলা পদে নিয়োগের জন্য ডব্লুবিসিএস পরীক্ষা নেয় পাবলিক সার্ভিস কমিশন। প্রতি বছর জানুয়ারি মাসে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। পরীক্ষার প্রথম ধাপ পেরোলে মূল পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাওয়া যায়। তাতেও উত্তীর্ণ হলে ইন্টারভিউ বা চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসার সুযোগ পান পরীক্ষার্থীরা। প্রশাসনের দাবি, পরীক্ষার কোন ধাপে কেমন প্রস্তুতি নিতে হয়, সে সম্পর্কে ভাল জ্ঞান না থাকা পড়ুয়ার সংখ্যাই বেশি। ফলে এখনও ডব্লুবিসিএস পরীক্ষায় সেভাবে দাগ কাটতে পারেননি হলদিয়া তথা আশপাশের এলাকার ছেলে-মেয়েরা।
প্রশিক্ষকের দায়িত্ব সামলানো ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘শুধু হলদিয়া নয়, জেলার বহু পরীক্ষার্থী ইচ্ছা থাকলেও, অর্থের অভাবে স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন না। তাঁদের পাশে দাঁড়াতেই এ ধরনের উদ্যোগ।’’
রবিবার ক্লাসে প্রশিক্ষণ দেন তীর্থঙ্করবাবুর মতো একঝাঁক ডব্লিউবিসিএস অফিসার। উল্লেখ্য, মাধ্যমিকে পরপর সাতবার রাজ্যে পাশের হারের নিরিখে শীর্ষে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। উচ্চ মাধ্যমিকেও শীর্ষে রয়েছে এই জেলা। সেই মেধাকে কাজে লাগিয়ে হলদিয়া-সহ সারা জেলা থেকে ‘দক্ষ’ আমলা তৈরি করে নিতে তৎপর হয়েছে রাজ্য প্রশাসন।
বিবেকানন্দ জানা নামে এক স্নাতক বলেন, ‘‘বেসরকারি কোচিং সেন্টার রয়েছে হলদিয়ায়। কিন্তু লেখানে প্রশিক্ষণের খরচ অনেক। তাই প্রশাসনের উদ্যোগে এ ধরনের প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা নিঃসন্দেহে প্রশংসার।’’
হলদিয়ার মহকুমাশাসক কুহক ভূষণ বলেন, ‘‘শুধু প্রশিক্ষণ দেওয়াই নয়, প্রশিক্ষণ নিতে আসা যুবক-যুবতীদের হাতে স্টাডি মেটেরিয়াল তুলে দেওয়া হবে। পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতিতে আয়োজিত হবে মক টেস্ট।’’