ঘাটালের প্রতাপপুরে উদ্ধারে নেমেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
জল নামতে শুরু করেছে শুক্রবার থেকেই। কিন্তু এখনও জলের তলায় চাষের জমি, ক্ষতিগ্রস্ত বহু বাড়ি। তার উপর শনিবার সকাল থেকে ফের আকাশের মুখ ভার। আশঙ্কায় ভুগছেন পাঁশকুড়ার বাসিন্দারা। ফের জোরাল বৃষ্টি হলে জল নামতে আরও দেরি হবে। ইতিমধ্যেই চাষের ক্ষতির হিসাব কষতে শুরু করেছেন চাষিরা। তবে সে বিষয়ে এখনই কিছু বলতে নারাজ জেলা কৃষি দফতর।
কাঁসাইয়ের জল বিপদসীমার নীচে নেমে যাওয়ায় নদী তীরের দক্ষিণ গোপালপুর এবং জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের জল কমে গিয়েছে। তবে মাঠে জল দাঁড়িয়ে প্রায় ৩-৪ ফুট। এখনও জলমগ্ন হাউর পঞ্চায়েতের কালিদান, শরণবাড়, পরমহংসপুর, সরিফাবাদ, মহিমপুর, ঘোষপুর পঞ্চায়েতের ঘোষপুর, আড়র, দলবাড়, গোবিন্দনগর পঞ্চায়েতের রাতুলিয়া মেদিনীপুর, কয়া, মহাপুর, ধনঞ্জয়পুর প্রভৃতি গ্রাম।
কালিদান গ্রামের বাসিন্দা প্রণব সামন্ত বলেন, ‘‘জল নামছে খুব ধীরে। গত কয়েকদিনে মাত্র এক ফুট জল কমেছে। ধান, ফুল ও আনাজ চাষের ক্ষতি হয়েছে।’’ জেলা কৃষি দফতরের হিসেব অনুযায়ী, পাঁশকুড়া-১ ব্লকে সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমির আমন ধান, ১১০ হেক্টর জমির ফুল ও ৭০ হেক্টর জমির আনাজ ক্ষতিগ্রস্ত।
জলমগ্ন এলাকার চাষিরা সংশয়ে, চলতি বছরে ফের চাষ তাঁরা করতে পারবে কি না! ঘোষপুর গ্রামের চাষি সুশীল সামন্ত বলেন, ‘‘আমার চার কাঠা জমিতে আমন ধানের বীজতলা জলের তলায়। আর কয়েকদিন পরেই ধান রোয়া হত। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল।’’ জল একেবারে নেমে গেলও ধান রোয়ার কাজ করতে পারবেন না সুশীলবাবু। তাঁর কাছে আর বীজতলা নেই। সঙ্কটে পড়বেন তাঁর মতো আরও অনেকেই। মহাপুর গ্রামের চাষি মদন বাগ বলেন, ‘‘১০ কাঠা জমিতে গাঁদাফুল আর ১০ কাঠা জমিতে ঢেঁড়শ চাষ করেছিলাম। সব এখন জলের তলায়। এতবড় ক্ষতি সামলাব কি করে বুঝতে পারছি না!’’
জেলা কৃষি দফতরের সহ-অধিকর্তা (শস্য সুরক্ষা) মৃণালকান্তি বেরা অবশ্য বলেন, ‘‘পরিস্থিতি উন্নতি হলে যাতে ফের চাষ করতে পারেন সে জন্য বীজ বা আর্থিক সহায়তার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত হিসেব করা হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।’’