— প্রতীকী চিত্র।
পঞ্চায়েত সমিতিতে স্থায়ী সমিতি গঠনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষ চরমে। রণক্ষেত্র পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি-২ ব্লকের নিচকসবা এলাকা। বিডিওর দফতর লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিরাট পুলিশ বাহিনী। তার পরেও বোমা-গুলি বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে বিডিও দফতরে হাজির হন কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী। বিজেপির দাবি, তৃণমূল এ সব করেছে। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, তারা জিতছে বুঝেই বিজেপি হামলা করেছে। ঝামেলার জেরে খেজুরি-২ ব্লকের স্থায়ী সমিতি গঠন স্থগিত হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত বিজেপির বেশ কয়েক জন গুরুতর জখম হয়েছেন। যদিও তৃণমূলের দাবি, বিজেপি কর্মীরাই হামলা চালিয়েছেন।
খেজুরি-২ পঞ্চায়েত সমিতির ১৫টি আসনের মধ্যে ১০টিতে একক ভাবে জয়ী হয়েছে বিজেপি। তৃণমূল জিতেছে পাঁচটি আসনে। কিন্তু বোর্ড গঠনের আগেই বিজেপির মণ্ডল সভাপতি এবং তাঁর অনুগামীরা তৃণমূলে যোগ দেন। ওই আট জন সদস্যের সমর্থনে তৃণমূল বোর্ড গঠন করে। মঙ্গলবার সেখানে স্থায়ী সমিতি গঠন ছিল। অঙ্কের হিসাবে বিধায়ক, জেলা পরিষদ সদস্য, পঞ্চায়েত প্রধান মিলিয়ে বিজেপির পাল্লা ভারী ছিল বলে খবর। বিজেপির দাবি, সে কারণেই হামলা করছে তৃণমূল।
মঙ্গলবার হিংসা ছড়াতে পারে আঁচ করে আগে থেকেই বিডিও অফিস চত্বরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। দুপুরের দিকে বিজেপি ও তৃণমূলের প্রতিনিধিরা বিডিও অফিসে গেলে ভোটদানের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এর মধ্যে আচমকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। অভিযোগ, বিডিওর দফতর লক্ষ্য করে হামলা শুরু হয়। আক্রান্ত হন বিডিও। হাতাহাতি শুরু হয় তৃণমূল এবং বিজেপির সমর্থকদের। এই সময় কাঁথির সাংসদ শিশির, তাঁর ছোট ছেলে, বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার নেতা সৌমেন্দু অধিকারী বিডিও অফিসে এলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। সৌমেন্দু বলেন, ‘‘তৃণমূল হেরে যাবে বুঝতে পেরেই মঙ্গলবার বোমা-গুলি নিয়ে হামলা চালিয়েছে। তৃণমূলের হামলায় বিজেপির ৩ জন জখম হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা দেখার দায়িত্ব প্রশাসনের। তাঁরা কী ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেবে, সেটা তাঁদেরই দেখতে হবে।’’
অন্য দিকে, খেজুরির তৃণমূল নেতা শ্যামল মিশ্রের দাবি, ‘‘এ দিন বিজেপির ১১ জন জনপ্রতিনিধি বিডিও অফিসে ছিলেন। বিধায়ক, তিন প্রধান, জেলা পরিষদ সদস্য সকলেই হাজির ছিলেন। কিন্তু তৃণমূল এখানে বোর্ড গঠন করেছে। তাই বিজেপি প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করতে বিডিও অফিসের ভেতর বোমাবাজি করেছে। বিডিওর উপর হামলা চালিয়েছে।’’ শ্যামলের অভিযোগ, তাঁর বাড়িতেও হামলা চালানো হয়েছে। তবে গোটা ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।