তাঁদের আশ্বস্ত করে সভায় গিয়েছিলেন অভিষেক। তার ১৩ দিনের মাথায় হাতে হাতে পাট্টা পেলেন মোহনপুর এবং মাতকাতপুরের বাসিন্দারা। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘুরে দেখেছিলেন খড়্গপুরের মাতকাতপুরের গ্রাম। তিনি পশ্চিম মেদিনীপুরের সেই ছোট্ট গ্রামের দাবিদাওয়া শুনে ফেরার ১৩ দিনের মধ্যেই জমির পাট্টা পেলেন এলাকার ২০৯ জন। অভিষেককে পাশে পেয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁরা। তার পর প্রায় ১৫০ বছরের স্বপ্ন পূরণ হল ১৩ দিনের মাথায়। শুক্রবার বিকেলে খড়্গপুর-১ ব্লকের বিডিও অফিস প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিক ভাবে জমির পাট্টার কাগজ তুলে দেওয়া হল প্রাপকদের হাতে। আপ্লুত গ্রামবাসীরা।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরের সভায় যোগ দেওয়ার আগে খড়্গপুরের গ্রামে ঝটিকা সফর করেন তৃণমূল নেতা-সাংসদ অভিষেক। মাতকাতপুর এবং মোহনপুর এলাকায় দাঁড়িয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে দেখা করেন অভিষেক। তাঁকে কাছে পেয়ে অভাব-অভিযোগ জানিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। জানিয়েছিলেন, কাঁসাই নদীর ধারে কয়েক পুরুষ ধরে বসবাস করছেন তাঁরা। কিন্তু জমির পাট্টা না থাকায় সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাঁদের আশ্বস্ত করে সভায় গিয়েছিলেন অভিষেক। তার পর কেটে গিয়েছে ১২ দিন। ১৩ দিনের মাথায় হাতে হাতে পাট্টা পেলেন মোহনপুর এবং মাতকাতপুরের বাসিন্দারা।
শুক্রবার খড়্গপুর গ্রামীণ থানার অন্তর্গত বিডিও অফিসে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ওই গ্রামবাসীদের পাট্টা প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী শিউলি সাহা, তৃণমূলের জেলা সহ-সভাধিপতি তথা বিধায়ক অজিত মাইতি, মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়া, জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ হাজরা এবং জেলাশাসক খুরশেদ আলি কাদরী। জেলাশাসক বলেন, ‘‘আজ (শুক্রবার) ২০৯ জনকে পাট্টা দেওয়া হয়েছে। দ্রুত গতিতে কাজ করেছেন সবাই। যাঁরা পাট্টা পেয়েছেন, তাঁরা সুষ্ঠু ভাবে পরিষেবা পাবেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এই পরিষেবার দরকার ছিল। এই গ্রামবাসীরা প্রায় সবাই আর্থিক ভাবে পিছিয়ে। এতে ওঁদের সাহায্য হল।’’ ওই এলাকার বিধায়ক দীনেন রায় বলেন, ‘‘এলাকার জমি নিয়ে দীর্ঘ দিনের সমস্যা ছিল। তার সমাধান হয়েছে।’’
পাট্টা পেয়ে উচ্ছ্বসিত এলাকার বাসিন্দারা। ঊর্মিলা রায় নামে এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রায় ১৫০ বছর ধরে বসবাস করেও নদীর ধারে বাড়ি হওয়ায় পাট্টা পায়নি আমাদের পূর্বপুরুষ। আমরাও এত দিন সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলাম। গত ৪ ফেব্রুয়ারি উনি দেখে গিয়েছিলেন। আর আজ (১৭ ফেব্রুয়ারি) জমির পাট্টা পেলাম। খুব ভাল লাগছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ।’’
সূর্য রায় নামে অন্য এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, ‘‘কোনও দিন ভাবিনি যে আমরা জমির পাট্টা পাব। আজ আমাদের খুব আনন্দের দিন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের বাড়ি দেখে গিয়েছিলেন। সমস্যার কথা শুনেছিলেন। আশ্বাস দিয়েছিলেন। তিনি কথা রেখেছেন।’’
সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। এই পাট্টা বিলির পর বিজেপি পরিচালিত বড়কলা পঞ্চায়েতের অধীনস্থ মাতকাতপুর এবং মোহনপুরে তৃণমূল এক চাল এগিয়ে গেল বলে মনে করা হচ্ছে।