সেই পোস্টার ঘিরে চাঞ্চল্য পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে। — নিজস্ব চিত্র।
গ্রাম কমিটির তুঘলকি নিদানে গ্রামের মন্দিরের পুজোর প্রসাদ থেকে বঞ্চিত রাখার অভিযোগ দুটি পরিবারের। গ্রাম কমিটির তরফে পোস্টার সেঁটে ওই দুই পরিবারকে বয়কট করে রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল থানার রঙ্গীবসান এলাকায়।
পোস্টারে দাবি করা হয়েছে, ‘‘রঙ্গীবসান উত্তর পল্লি কমিটির নির্দেশে গ্রামের দুই বাসিন্দা গুরুপদ বাড়ুই ও স্বরূপ ঘোড়ুইয়ের পরিবারকে একঘরে করা হয়েছে। এই দুই পরিবারের কারও গ্রামের মন্দিরে পুজো দেওয়া ও প্রসাদ পাওয়া নিষেধ। তবুও গ্রামের পুজোর ভোগ বিতরণের সময় ওই পরিবারের কাউকে প্রসাদ দেওয়া হলে বা কেউ নেমন্তন্ন করে খাওয়ালে তাঁকে জরিমানা বা বয়কট করা হবে।’’ রবিবার সকালে এমন পোস্টারে নজরে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়।
স্বরূপের স্ত্রী লক্ষ্মীরানি বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে গ্রামের মোড়লদের জমি নিয়ে বিবাদ চলছিল। আমরা বিজেপি করি। এই কারণে গত ৮ বছর ধরে আমাদের বয়কট করে রাখা হয়েছে। কিন্তু আজ পোস্টার সেঁটে আমাদের চরম অসম্মান করা হল।’’ প্রয়োজনে পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছেন স্বরূপ। ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘আজকের দিনেও মধ্যযুগীয় নিদান দিয়ে দুটি পরিবারকে বিজেপি করার দায়ে একঘরে করে রাখা হয়েছে। মহিষাদলে আগেও বেশ কয়েকটি পরিবারকে এ ভাবেই একঘরে করে রাখা হয়েছে। মানুষ এর বিচার চায়। যাঁরা এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছি।’’
তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী এই ঘটনাকে রাজনৈতিক গিমিক আখ্যা দিয়ে দাবি করেন, ‘‘ভোট যত এগিয়ে আসবে ততই এমন পোস্টার নজরে আসবে। কোনও পরিবারকে ৮ বছর ধরে বয়কট করা হল অথচ এ বারই তাঁদের নামে পোস্টার পড়ল! এর পেছনে গ্রাম কমিটির কোনও ভূমিকা নেই, এটা আসলে নজরে আসার জন্য বিজেপির ষড়যন্ত্র। আমরাও পুলিশকে বলেছি গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখতে যে কারা পোস্টার দিল।’’ মহিষাদল থানার পুলিশ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত পুলিশে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।