পথ কুকুরদের শরীরে মিলেছে অ্যাসিডের ক্ষত। ছবি: সংগৃহীত।
কুকুরের ময়নাতদন্ত হল মেদিনীপুরে। ঠিক কীভাবে মৃত্যু হয়েছে কুকুরের সেই বিষয়ে নিশ্চিত হতেই ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। মৃতদেহ থেকে ভিসেরা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই ভিসেরা কলকাতার পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। পশু চিকিত্সকেরা জানাচ্ছেন, বিষক্রিয়ায় এই মৃত্যু কি না তা ময়নাতদন্তের রিপোর্টে স্পষ্ট হবে। শহরে পথ-কুকুরের মৃত্যু নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ হয়েছে। এরপরই নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। টনক নড়েছে প্রাণিসম্পদ দফতরেরও।
একটি কুকুরের যে ময়নাতদন্ত হয়েছে তা মানছেন মেদিনীপুরের (সদর) প্রাণিসম্পদ আধিকারিক অপূর্ব চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “একটি কুকুরের ময়নাতদন্ত হয়েছে। কুকুরটির মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” বিষক্রিয়ায় কি কুকুরটির মৃত্যু হয়েছে? অপূর্ববাবু বলেন, “এটা এখনই বলা সম্ভব নয়। ভিসেরা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ স্পষ্ট হবে।”
মেদিনীপুর শহরে পশুর উপর অত্যাচারের কিছু ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে। পুরসভা ঠুঁটোই! গত কয়েকদিনে মেদিনীপুরের নজরগঞ্জে ৫টি কুকুর, ২টি গরু, একটি বিড়ালের মৃত্যু হয়। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় শহরে। বিষ মেশানো খাবার দিয়ে অবলা পশু মারার অভিযোগ ওঠে এ ক্ষেত্রে। স্থানীয়দের দাবি, এক দুষ্টচক্রের বর্বরতার শিকার হচ্ছে অবলা পশু। দুষ্টচক্রের লোকজন রাতে এলাকায় এসে বিষ মেশানো খাবার দিয়ে যাচ্ছে। বুধবার মৃত একটি কুকুরকে পশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এখানে কুকুরটির ময়নাতদন্ত হয়।
নজরগঞ্জের ঘটনা নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন পশুপ্রেমীরা। এক পশুপ্রেমী সংগঠনের পক্ষে বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, “পশু বা অবলা জীব হলেও তাকে মেরে ফেলার অধিকার কারও নেই। আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছি।” দিন কয়েক আগে পাটনাবাজারে অ্যাসিড হামলার শিকার হয় পথ-কুকুর। এর আগে মির্জাবাজারে পথ-কুকুরের গায়ে অ্যাসিড ছোঁড়া হয়েছিল। মির্জাবাজারে সাত-সাতটি কুকুরের গায়ে অ্যাসিড ছোঁড়া হয়েছিল। এর মধ্যে একটি কুকুর মারা যায়। আরও দু’টি কুকুরের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। তাদের চিকিত্সা করানো হয়। দিন কয়েক পরে পাটনাবাজারের কুকুরটিও মারা গিয়েছে। পশুপ্রেমীদের বক্তব্য, পথ-কুকুরের গায়ে অ্যাসিডই ছোঁড়া হয়েছিল। কুকুরের গায়ে তাঁরা অ্যাসিডের ক্ষতই দেখতে পেয়েছেন।
এমন ঘটনা এড়াতে এবং অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার দাবিতে জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ার দ্বারস্থ হয়েছিলেন পশুপ্রেমীরা। পুলিশ সুপার আশ্বস্ত করেন। শহরের এক পশুপ্রেমীর কথায়, “অবলা জীবদের এ ভাবে কষ্ট দেওয়ার মানে হয় না।” তাঁর কথায়, “শহরে এমন কিছু ঘটনা ঘটছে যা অত্যন্ত অমানবিক।” স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, “আমরা আরও সতর্ক থাকছি। গভীর রাত পর্যন্ত নজরদারি চালাচ্ছি।”