প্রতীকী ছবি।
সাজা শোনানো হল ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থা ‘পিনকনে’র কর্ণাধার মনোরঞ্জন রায়ের স্ত্রী মৌসুমী রায়কে। বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা (তৃতীয়) আদালতের বিচারক মৌসুমীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছেন।
ওই আর্থিক প্রতারণা মামলায় গত ৩ অক্টোবর পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের (তৃতীয়) তথা অর্থনৈতিক অপরাধের বিশেষ আদালতের তৎকালীন বিচারক মৌ চট্টোপাধ্যায় মনোরঞ্জ, মৌসুমী-সহ আট জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে ওই নির্দেশের সময়ে এজলাসে হাজির ছিলেন না মনোরঞ্জন এবং সংস্থা’র ডিরেক্টর বোর্ডের সদস্য মৌসুমী। মনোরঞ্জন অসুস্থ থাকায় তাঁকে ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে সাজা শোনানো হয়েছিল। কিন্তু তখনও ফেরার ছিলেন মৌসুমী। তাঁর মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপে অবশ্য আদালতের রায়ের প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছিল।
এর প্রায় দেড় মাস পরে গত ১৭ নভেম্বর পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে (তৃতীয়) আত্মসমর্পণ করেছিলেন মৌসুমী। ওই দিন আদালতে মৌসুমীর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট পেশ করেছিলেন তাঁর আইনজীবী। উভয়পক্ষের শুনানির পর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (তৃতীয়) সঞ্জীব দে নির্দেশ দেন, দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তি করোনা মুক্ত হওয়ার পরে তাঁকে ফের আদালতে হাজির করতে হবে। জেল হেফাজতে করোনা বিধি মেনে মৌসুমীকে সংশোধানাগারে রাখা হয়। করোনা মুক্ত হওয়ার পরে গত ২৬ নভেম্বর মৌসুমীকে আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে সেদিন আদালত ‘বন্ধ’ থাকার কারণে তাঁকে এজলাসে তোলা যায়নি।
এর পরে এ দিন মৌসুমীকে সাজা শোনানোর জন্য মৌসুমীকে পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা (তৃতীয়) বিচারকের এজলাসে সশরীরে হাজির করানো হয়। আদালতে মৌসুমীর পক্ষের আইনজীবী এবং সরকার পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শুনানীর পরে বিচারক সঞ্জীব দে পিনকন সংস্থার পরিচালন পর্ষদ সদস্য মৌসুমীকে রাজ্য সরকারের ‘প্রটেকশন অফ ডিপোজিটার্স ফিনান্সিয়াল এস্টাবিলিসমেন্ট অ্যাক্ট’ অনুযায়ী যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছেন। পাশাপাশি, এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ বহাল রাখেন।
ওই মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী সৌমেন কুমার দত্ত বলেন, ‘‘পূর্বে সাজা ঘোষণার দিন মৌসুমী পলাতক ছিলেন। আদালতে হাজির ছিলেন না। তাই এ দিন তাঁকে হাজির করিয়ে রায় শোনানো হল।’’ এ দিন আদালতে মৌসুমীকে এজলাসে তোলার তোলার সময় বেশ কয়েকজন আমানতকারী আদালত চত্বরে টাকা ফেরত চেয়ে এবং সংস্থার কর্তাদের কড়া শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখান। তবে কড়া পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকায় বড় কোনও অশান্তি ঘটেনি।