ভারত সফরকারী নাগরিকদের জন্য বিশেষ পরামর্শ আমেরিকার। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
ভারতের ‘মাওবাদী প্রভাবিত’ কোন কোন এলাকায় যেতে লাগবে বিশেষ অনুমতি, ট্র্যাভেল অ্যাভাইজরিতে দেশের নাগরিকদের জন্য সেই পরামর্শ দিল আমেরিকা। সে দেশের স্টেট ডিপার্টমেন্টের তরফে ভারতের বিভিন্ন এলাকার যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তাতে রয়েছে এ রাজ্যের জঙ্গলমহলও।
আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্টের ট্র্যাভেল অ্যাভাইজরিতে এ রাজ্যের পশ্চিম অংশ, পূর্ব মহারাষ্ট্র, উত্তর তেলঙ্গানার উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া ছত্তীসগঢ় এবং ঝাড়খণ্ডের কিছু অংশকেও ‘মাওবাদী প্রভাবিত’ এলাকা হিসাবে দেখানো হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ এবং বিহার এবং ওড়িশার সীমানাবর্তী এলাকাগুলিতেও মাওবাদী প্রভাব রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই সব এলাকায় ভ্রমণ করতে গেলে আমেরিকার নাগরিকদের সে দেশের দূতাবাসের থেকে বিশেষ অনুমতি নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। গত ১৫ নভেম্বর এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
চলতি মাসে বেশ কয়েকটি ঘটনায় মাওবাদীরা শিরোনামে। সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন শীর্ষ স্তরের মাওবাদী নেতা প্রশান্ত বসু ওরফে কিসান’দা। তার প্রতিবাদে গত ২০ নভেম্বর ভারত বন্ধের ডাক দিয়েছিল মাওবাদীরা। তবে ঝাড়গ্রামে তার কোনও প্রভাব পড়েনি। জঙ্গলমহলে যাতে নতুন করে অশান্তি তৈরি না হয় সে জন্য সতর্ক জেলা প্রশাসন। এর মধ্যেই অবশ্য মহারাষ্ট্রের গড়চিরৌলিতে ২৬ জন মাওবাদী নিহত হয়েছে এনকাউন্টারে। আবার বুধবার কিসেন’জির দশম মৃত্যু বার্ষিকী। ২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর বুড়িশোলের জঙ্গলে এনকাউন্টে মারা যান কিসান’জি।
অন্য দিকে, সম্প্রতি লালগড় থানার পুলিশ উদ্ধার করে দু’টি তাজা ল্যান্ডমাইন। ওই ঘটনায় ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে পুলিশ। কোথাও কোনও নাশকতার পরিকল্পনা ছিল কি না তা-ও জানার চেষ্টা চলছে। তা ছাড়া বেশ কিছু দিন ধরেই জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায় উদ্ধার হয় লালকালিতে লেখা মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার। সেই পোস্টার কে বা কারা লাগিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে মাও-যোগ আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে। এই আবহে আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট যখন পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন তখন অবশ্য উল্টো পথে হেঁটে বরাভয় দিচ্ছে প্রশাসন। ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘জঙ্গলমহলে নজরদারি চলছে। সেই সঙ্গে নাকা তল্লাশিও চালানো হচ্ছে। স্বাভাবিক রয়েছে পরিস্থিতি।’’