potato farmers

অনিশ্চিত বাজারেই দামের ওঠা-নামা

আলু চাষে একেবারেই ফাটকা লাভ। কোনও বছর ক্ষতি তো পরের বছর পুষিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বছর বছর আলু চাষ করেই চাষিদের অভিজ্ঞতা এমনই।

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৩ ০৯:১৪
Share:

চলছে আলু তোলার কাজ। লালগড়ের ধামরোতে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

কোনও বার আলুতে প্রচুর লাভ পান চাষিরা। কোনও বছর আবার চাষ করেও ঘর থেকে টাকা বেরিয়ে যায়। আলু চাষের সঙ্গে তাই জড়িয়ে থাকে ঝুঁকি। ক্ষতি সামলাতে আলুর দাম ন্যূনতম কুইন্টাল প্রতি হাজার টাকা করার দাবি উঠেছে।

Advertisement

গত বছর এমন সময় আলুর দাম ছিল ১৫০০ টাকা কুইন্টাল। আলু তোলার মরসুমে ওই দামে আলু বেচে ভালই আয় হয়েছিল চাষিদের। গত বছর প্রথম থেকেই বাজারে খুচরো আলুর দামও ছিল নাগালের বাইরে। ২৫-৩০ টাকা কিলো দরে আলু কিনে হয়য়রান হয়েছিলেন আমজনতা। তার আগের বছর করোনা আবহে মাঠ থেকে আলু বিক্রি হয়েছিল ৭০০-৮০০ টাকা কুইন্টাল। সে বারেও চাষিদের লাভ হয়েছিল। কিন্তু এ বার প্রথম থেকেই উল্টো চিত্র। নতুন আলুর দাম নিম্নমুখী। তাতেই মাথায় হাত চাষিদের।

আলু চাষে একেবারেই ফাটকা লাভ। কোনও বছর ক্ষতি তো পরের বছর পুষিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বছর বছর আলু চাষ করেই চাষিদের অভিজ্ঞতা এমনই। শত বাধা, ঝুঁকির পরেও তাই জেলার একটা বড় অংশের চাষি আলু চাষের সঙ্গে যুক্ত। চাষিরা জানালেন, গত বছর প্রথম দিকে আলুর দাম বেশি থাকলেও পুজোর পরে দাম কমতে শুরু করে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে পুরনো আলু ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত মজুত ছিল। আরও বেশি লাভের জন্য অনেকেই আলু মজুত করে রেখেছিলেন। কিন্তু শেষে আর লাভ পাননি চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

সব পণ্যের মতোই আলুর দাম নির্ভর করছে মূলত চাহিদার উপর, উৎপদান কেমন হয়েছে তার উপর। এখানকার আলুর ভিন্‌ রাজ্যেও কদর আছে। প্রতি বছর বিহার, ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ডে আলু যায়। স্বভাবতই চাহিদা বেশি থাকলে আলুর দাম বেশি থাকে। কিন্তু এ বছর ভিন্‌ রাজ্যে আলুর চাহিদা তুলনায় কম। উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাবে ভাল পরিমাণ আলু চাষ হয়েছে। ফলনও ভাল। তাই এ রাজ্যের আলু ভিন্‌ রাজ্যে কম যাচ্ছে। এতদিন হিমঘরও বন্ধ ছিল। সব মিলিয়ে দাম ওঠা-নামা করছে।

হিমঘর খুলতেই অবশ্য দাম বাড়তে শুরু করেছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা আলু ব্যবসায়ী সংগঠনের তরফে বরুণ পণ্ডিত বলেন, “সবে হিমঘর খুলেছে। ভিন্‌ রাজ্যেও আলু যেতে শুরু করেছে। তবে আলুর ভবিষ্যৎ এ বার ঠিক কী হবে,তা এখনই বলা যাবে না।”

এই অনিশ্চয়তার জন্য আলুর বর্ধিত দামের দাবি তুলেছেন চাষিরা। ঘাটালের পাঁচঘোড়ার আলু চাষি নেপাল গুছাইত বলছিলেন, “আলু চাষে যে পরিমাণ খরচ হয়েছে, সেখানে দাম প্রতি কুইন্টাল ন্যূনতম হাজার টাকা করতে হবে। তবেই দু’পয়সা পকেটে ঢুকবে।” পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরী বলেন, “রাজ্য সরকার সাড়ে ছ’শো টাকা দরে আলু কেনার কথা ঘোষণা করেছে। সেই মতো জেলায় আলু কেনার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রচার চলছে। বিডিও অফিসে নাম নথিভুক্ত করানোর কথা বলা হচ্ছে।” জেলাশাসক আরও জানাচ্ছেন, চাষিরা খোলা বাজারে আলু বিক্রি করতেই পারেন। কিন্তু কেউ চাইলে সরকারি মূল্যেও আলু বিক্রি করতে পারেন। হিমঘরগুলিতে সরকারি দরে আলু কেনা চলছে। (শেষ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement