মনোনয়ন দিতে যাচ্ছেন বিজেপি প্রার্থী শুভজিৎ রায়। পাশে দিলীপ ঘোষ, জোতির্ময় মাহাতো ও সৌমেন্দু অধিকারী। কালেক্টরেট মোড়। নিজস্ব চিত্র।
মনোনয়নপত্র দিলেন উপনির্বাচনে মেদিনীপুরের বিজেপি প্রার্থী শুভজিৎ রায়। শুভজিতের পরিচিতি শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী হিসেবে। তবে তাঁর মনোনয়নের মিছিলে ছিলেন দিলীপ ঘোষ। ছিলেন শুভেন্দুর ভাই তথা কাঁথির সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারী, পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো। বুধবার দুপুরে শহরের বটতলাচক থেকে বিজেপির মিছিল শুরু হয়। শেষ হয়েছে কালেক্টরেট মোড়ে।
প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণার পরই দিলীপের কাছে গিয়েছিলেন শুভজিৎ। পা ছুঁয়ে প্রণাম করে প্রাক্তন সাংসদের আশীর্বাদ নিয়েছিলেন তিনি। সে দিনই দিলীপ তাঁকে জানান, মনোনয়নের মিছিলে থাকবেন। কথা রেখেছেন। এ দিন মিছিল শেষে দিলীপ বলেন, ‘‘বান্টি (শুভজিৎ) আমাদের খুব পুরনো কর্মী, আইনজীবী। মেদিনীপুরের সবাই ওঁকে চেনেন। ওঁর পিছনে দলের সবাই রয়েছে। পুরোদস্তুর লড়াই হবে।’’ দিলীপের দাবি, ‘‘হাওয়া তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মানুষের ক্ষোভ এই উপনির্বাচনে আছড়ে পড়বে।’’ দলের তরফে এই ভোটের ইনচার্জ সৌমেন্দুও বলেন, ‘‘পরিস্থিতি আমাদের পক্ষে রয়েছে। ভোট শান্তিপূর্ণভাবে হলে আমরাই জিতব।’’
মেদিনীপুরে বিজেপির অন্দরের দ্বন্দ্ব লোকসভা ভোটের আগেও প্রকাশ্যে এসেছে। এখানে দিলীপ-শুভেন্দু ‘দ্বৈরথ’ নিয়ে চর্চা আছে। প্রাক্তন সাংসদ দিলীপকে সরিয়ে এ বার মেদিনীপুরে বিজেপি প্রার্থী করেছিল অগ্নিমিত্রা পালকে। তিনি হেরেছেন। এ বার বিধানসভা উপনির্বাচনে ‘দ্বন্দ্ব’ দূরে রাখতে সচেষ্ট গেরুয়া শিবির।গত লোকসভায় শহরে বিজেপি এগিয়ে ছিল। মেদিনীপুর বিধানসভায় ঘাসফুলের ‘মান’ বাঁচিয়েছে গ্রামই। লোকসভা ভোটের নিরিখে মেদিনীপুর বিধানসভা থেকে তৃণমূল ‘লিড’ পেয়েছিল ২,১৭০ ভোটের। অথচ শহরে তারা বিজেপির চেয়ে পিছিয়ে ছিল ৫,১০০ ভোটে। মেদিনীপুর শহরের ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৫টিতে এগিয়েছিল বিজেপি।
এ দিন সকালে হবিবপুরে সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরে ও বটতলাচকের কালী মন্দিরেও পুজো দিয়েছেন শুভজিৎ। মিছিলে হুড খোলা জিপে প্রার্থীর সঙ্গে ছিলেন দিলীপ। মিছিল শেষে কালেক্টরেট মোড়ে ক্ষুদিরামের মূর্তিতে মাল্যদান করেন দিলীপরা। শুভজিতের দাবি, ‘‘মানুষ বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছে।’’ দলীয় সূত্রে খবর, ‘শুভ’ দিনক্ষণ দেখেই মনোনয়ন করেছেন বিজেপি প্রার্থী। আজ, বৃহস্পতিবার মনোনয়ন করবেন তৃণমূল প্রার্থী সুজয় হাজরা। তাঁর প্রত্যয়, ‘‘মেদিনীপুরে আমাদের জেতাটা শুধু সময়ের অপেক্ষা।’’