একশো হাতের দুর্গা। —নিজস্ব চিত্র।
দশ হাত নয়। এখানকার দুর্গার হাতের সংখ্যা শত। একশো হাতের দুর্গার আরধনা করছে আলংগিরি বিবেকানন্দ স্পোর্টিং অ্যাসোসিয়েশন। দশ হাতে অসুর নিধন করবেন দেবী। বাকি নব্বই হাতে সমাজের অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে দেবী দুর্গাকে এখানে আবাহন করা হয়েছে। আয়োজনে রয়েছে মেয়েদের আরও চারশো হাত।
এগরার আলংগিরি এলাকার এই পুজোর আয়োজনে নারীশক্তিই গুরুত্ব পেয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকা। এখানকার মহিলারা আজও সর্বজনীন পুজো বা উৎসবে সেভাবে শামিল হতে পারেন না। সংসার জীবনে ব্যস্ত থাকতে হয় তাঁদের। দুর্গাপুজোয় মহিলাদের শামিল করতে উদ্যোক্তারা প্রথম বর্ষের পুজোয় নারীশক্তির থিম ভেবেছেন। পুজো কমিটিতে আলংগিরি এলাকার দুই শতাধিক মহিলাকে শামিল করা হয়েছে। মেয়েদের সহযোগিতা করতে ছেলেরাও সেই কমিটিতে রয়েছেন।
পূর্ব মেদিনীপুরের আলংগিরি, কেয়া, আসদা, হাসিমপুর ছাড়াও পশ্চিম মেদিনীপুরের বৈতা এলাকার বাসিন্দারা এই পুজোয় সদস্য হয়েছেন। সমাজে প্রতিনিয়ত অশুভ শক্তির প্রভাবে হিংসা হানাহানি লেগেই রয়েছে। অসুররূপী অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে একশো হাতে দেবী দুর্গাকে সজ্জিত করা হয়েছে। ষষ্ঠীতে পুজো উদ্বোধনে থাকছে বিশেষত্ব। পুজো উদ্বোধনে কোনও তারকা আহ্বান করেনি পুজো কমিটি। আলংগিরির একশো তিন বছরের ভানু পাল ষষ্ঠীতে পুজো উদ্বোধন করবেন।
প্রতিমা ছাড়াও মণ্ডপ জুড়ে রয়েছে অন্য দেব দেবীর মূর্তি। নবপত্রিকা সংগ্রহ থেকে পুজোর আয়োজন থেকে ভোগ বিতরণে মহিলারাই পুজোর মধ্যমণি হয়ে থাকছেন। পুজোয় পাঁচদিনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনায় ও প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন মহিলারা। দুর্গা পুজোর আয়োজনের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতেই মহিলাদের পুজোয় শামিল করা হয়েছে, বলছে পুজো কমিটি।
বিবেকানন্দ স্পোর্টিং অ্যাসোসিয়েশন পুজো কমিটির সভাপতি অতসী মহাপাত্র বলেন, ‘‘প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকার মহিলাদের দুর্গাপুজো কী সেই বিষয়ে খুব একটা ধারণা নেই। দুর্গাপুজোর মাহাত্ম্য বোঝাতে ও সর্বজনীন কাজে মহিলাদের শামিল করতে এই নারীশক্তিকে একত্রিত করা হয়েছে। অসুররূপী অশুভ শক্তিকে একশো হাতের দেবী দুর্গা নিধন করবে।’’