স্কুল পোশাকই হোমে ফেরাল উমেশদের

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার উমেশ ও শুভজিৎ দু’জনেই স্কুলের পোশাক পড়়ে ছিল। স্কুলের শার্টের পকেটের উপর লাগানো ছিল স্কুলের নাম ও ঠিকানা লেখা লোগো। সেই লোগো দেখেই পুলিশ বুঝতে পারে, তারা পূর্ব মেদিনীপুরের একটি হোমের স্কুলে পড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:১৯
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

কলকাতা দেখার শখ হওয়ায় নেহাতই ঘুরতে গিয়েছিল তারা, হোমে ফিরে আসার পর এমনই জানাল নিখোঁজ হয়ে যাওয়া প্রতিবন্ধী বালক। গত বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতার বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির ফরিদপুরের বোধোদয় হোমের দুই আবাসিক বালক উমেশ মান্ডি ও শুভজিৎ পড়ুয়া। বৃহস্পতিবার রাতেই শিয়ালদহ স্টেশন থেকে বছর দশের ওই দুই বালককে উদ্ধার করে বারাসত থানার পুলিশ। তারা পালিয়ে গিয়েছিল কি না জানতে চাওয়া হলে উমেশ বলে, ‘‘আগে কলকাতায় থাকতাম। শহর দেখার ইচ্ছে হওয়ায় একটু ঘুরতে গিয়েছিলাম।’’

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার উমেশ ও শুভজিৎ দু’জনেই স্কুলের পোশাক পড়়ে ছিল। স্কুলের শার্টের পকেটের উপর লাগানো ছিল স্কুলের নাম ও ঠিকানা লেখা লোগো। সেই লোগো দেখেই পুলিশ বুঝতে পারে, তারা পূর্ব মেদিনীপুরের একটি হোমের স্কুলে পড়ে। তবে ওই দুই বালক তাদের হোমের ফোন নম্বর জানাতে পারেনি। বারাসত থানার স্থানীয় অন্য একটি হোমের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ বোধোদয় হোমের ফোন নম্বর জোগাড় করে। ফোনেই হোম কর্তৃপক্ষকে পুরো ঘটনা জানায় পুলিশ।

উমেশ ও শুভজিৎ দু’জনেই দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। বাবা-মা মারা যাওয়ার পর ২০১২ সালে ‘চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি’-র মাধ্যমে এই হোমে আসে শুভজিৎ। উমেশের বাবার মৃত্যুর পর মা তাকে নিয়ে কলকাতায় চলে আসেন। সেখানে একটি হোটেলে কাজ করতেন তিনি। পরে মা-রও মৃত্যু হলে ওই হোটেলের এক কর্মী উমেশকে বোধোদয় হোমে দিয়ে যান।

Advertisement

গত ২৫ জানুয়ারি হোমের পাঁচ জন বালককে চিকিৎসার জন্য বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। উমেশ ও শুভজিৎ ছাড়াও গণেশ, রাজা ও সোহেলকেও কলকাতা নিয়ে গিয়েছিলেন হোমের কাউন্সিলর শুভব্রত পাল ও প্যারা মেডিক্যাল স্টাফ অনিমেষ গিরি। শুভব্রতবাবু বলেন, “উমেশ ও শুভজিৎকে ডাক্তার দেখানো হয়ে গিয়েছিল। তাদের একটু অপেক্ষা করতে বলে বাকি তিনজনকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাই। সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ বেরিয়ে এসে দেখি দু’জন উধাও।’’ তাঁর কথায়, ‘‘সন্ধে ৬টা পর্যন্ত হন্যে হয়ে খুঁজেও ওদের সন্ধান না মেলায় ভবানীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করি।’’

শনিবার বোধোদয় হোমে গিয়ে দেখা যায় উমেশ ও শুভজিৎ অন্য ছেলেদের সঙ্গে দিব্যি ক্লাস করছে। বিবেকানন্দ লোকশিক্ষা নিকেতন’ পরিচালিত বোধোদয় হোমের অধ্যক্ষ তাপস জানা বলেন, “কলকাতার হোটেলে থাকার ঘটনাটা উমেশ জানে। তাই ওরা আমাদের জানিয়েছে, তারা দু’জনে কলকাতা দেখতে বেরিয়েছিল।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ওরা কোনওদিন পালানোর চেষ্টা করেনি। ছোট ছেলে ভুল করতেই পারে। মনের উপর চাপ পড়বে ভেবে ওদের বেশি কিছু জিজ্ঞাসা করা হয়নি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement