এটিএমে ভরার আগেই লোপাট দেড় কোটি, ধৃত ২

ধৃত খড়্গপুরের আরামবাটির সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় ও নারায়ণগড়ের সুভাষ মাইতিকে সোমবার মেদিনীপুর জেলা আদালতে হাজির করা হয়। দু’জনকেই ৭ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯ ০০:২০
Share:

প্রতীকী ছবি।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে কয়েক কোটি টাকা তুলে এটিএমে ভরার দায়িত্ব ছিল এজেন্সি-র। পরে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ হিসাব কষতে গিয়ে দেখেন, অধিকাংশ এটিএমে জমাই পড়েনি টাকা। প্রায় দেড় কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগের তদন্তে নেমে রেলশহরের পুলিশ রবিবার রাতে দু’জনকে গ্রেফতার করল। উদ্ধার হল ৩৬ লক্ষ টাকা।

Advertisement

ধৃত খড়্গপুরের আরামবাটির সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় ও নারায়ণগড়ের সুভাষ মাইতিকে সোমবার মেদিনীপুর জেলা আদালতে হাজির করা হয়। দু’জনকেই ৭ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের খড়্গপুর আইআইটি শাখার ১ কোটি ৩৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা লোপাটের অভিযোগ রয়েছে। গত ১২ জুলাই অভিযোগ দায়ের করেছিল ব্যাঙ্কের নিযুক্ত মুম্বইয়ের এক ‘ক্যাশ রিপ্লেসমেন্ট এজেন্সি’। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজি সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “ব্যাঙ্কের এটিএমের টাকা লোপাটের অভিযোগ করেছিল একটি এজেন্সি। আমাদের টাউন থানার পুলিশ ২ জনকে গ্রেফতার করে কয়েক লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে। বাকি টাকার খোঁজ চলছে।”

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৮ জুলাই খড়্গপুরের আইআইটির ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা থেকে এজেন্সির কর্মী সোমনাথ প্রায় ২ কোটি ১০ লক্ষ টাকা তোলে। ওই টাকা বিভিন্ন এটিএম কাউন্টারে জমা করার কথা ছিল তাঁর। তালবাগিচার এটিএমে ৮ লক্ষ টাকা জমাও করা হয়। এর পরে উধাও হয়ে যান সোমনাথ। এ দিকে, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ হিসাব কষতেই ফাঁক ধরা পড়ে। এজেন্সিকে জানানো হয়। মাথায় হাত পড়ে এজেন্সির। গত ১২ জুলাই খড়্গপুর টাউন থানায় এসে এজেন্সির কর্তারা সোমনাথের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন ।

Advertisement

পুলিশের দাবি, ততদিনে সোমনাথ দেশের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে নেপাল সীমানায় পৌঁছে গিয়েছেন। মোবাইল টাওয়ার লোকেশনের সূত্রে তাঁর গতিবিধি নজরবন্দি করা হয়। রবিবার খড়্গপুরে আসতেই আইসি রাজা মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পাকড়াও করা হয় অভিযুক্তকে। সোমনাথের কাছে মেলে ৬ লক্ষ টাকা। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নারায়ণগড়ের সুভাষ মাইতির নাম জানতে পারে পুলিশ। সুভাষকে পাকড়াও করে তাঁর দেখানো একটি ঘর থেকে উদ্ধার হয় ৩০ লক্ষ টাকা।

এই ঘটনার পিছনে বড় চক্র জড়িত বলেই অনুমান পুলিশের। পুলিশের দাবি, গোটা ঘটনার ব্লু-প্রিন্ট তৈরি হয়েছিল অনেক আগে থেকে। তবে এজেন্সির উপর চাপ বাড়ালেও সরাসরি মামলায় জড়াননি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই এজেন্সি মারফত জমা না হওয়া ৭০ লক্ষ টাকা আদায়ও করেছে ব্যাঙ্ক। তবে ব্যাঙ্কের ম্যানেজার বিস্ময় কিশোর এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে ওই এজেন্সির অপারেশন ম্যানেজার সৌরভ বসু বলেন, “গত মাসে অডিট হয়েছিল। সব ঠিক ছিল। এই মাসে পরিকল্পনামাফিক এ সব হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। আমরা ৭ ০লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ককে ফেরত দিয়েছি। তবে এখন মনে হচ্ছে ১ কোটি ৩৮ লক্ষ ৫০ হাজারের বেশি লোপাট হয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement