পুরনো ভবনে দুই রোগী। নিজস্ব চিত্র।
ভগ্ন ভবনের রোগীদের নতুন ভবনে স্থানাস্থরিত করা হয়েছে। বাদ পড়েছেন শুধু দুই বৃদ্ধ রোগী। অভিযোগ উঠেছে, হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের পুরনো পরিত্যক্ত ভবনে ওই রোগীকে তালা বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের পুরোনো ভবনটির ভগ্নপ্রায় অবস্থা। সেটি যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে বলে জানিয়ে দিয়েছে পূর্ত বিভাগ। আপাতত মহকুমা হাসপাতাল সংলগ্ন একটি জায়গায় পুরানো ভবনের পিছনে নতুন একটি চারতলা ভবন তৈরি করা হয়েছে। সেই ভবনে সমস্ত রোগীদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গত ৩০ মে হাসপাতালের পুরনো ভবন থেকে পুরুষ সার্জারি এবং মেডিসিন বিভাগের ২৬ জন রোগীকে নতুন ভবনের স্থানান্তরিত করা হয়। তবে মেডিসিন বিভাগের দুই রোগীকে সেই ভগ্নপ্রায় ভবনে রাখা রয়েছে। ওই ওয়ার্ডের গেটে তালাও দেওয়া রয়েছে।
বৃহস্পতিবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, পরিতক্ত ওয়ার্ডে এক কোণে দুই রোগী দুটি শয্যায় শুয়ে রয়েছেন। একজন নিজের নাম জানান, মদন সিংহ। বাড়ি মহিষাদল এলাকায়। অন্য জন নাম বলতে পারেননি। এক রোগী বলেন, ‘‘প্রায় সাত দিন হল আমাদের এখানে এক কোণে ফেলে রাখা হয়েছে।। শুধু খাবার দেওয়া হয়। চিকিৎসক আসেন না।’’ তাঁদের বাইরে থেকে তালা দিয়ে রাখা হয় বলে দাবি করেন ওই রোগী।
হাসপাতালের কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, ওই দুই রোগী বেশ কয়েক বছর ধরে মেডিসিন বিভাগে ভর্তি রয়েছেন। তাঁদের পরিবারের তরফেও কোনও যোগাযোগ করা হয় না। দু’জনের কী ধরনের শারীরিক অসুস্থতা রয়েছে, তা অবশ্য খোলসা করে বলতে পারেননি হাসপাতালের কর্মীরা। তবে তাঁরা জানা, ওই দু’জন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছেন। কিন্তু তাঁদের কেন নতুন ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়নি? কর্মীদের একাংশের দাবি, ওই দুই রোগী অনর্থক শয্যা দখল করে রেখেছেন— এই অভিযোগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই তাঁদের নতুন ভবনে স্থানান্তরিত করা হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালে এক কর্মী বলেন, ‘‘যে দিন রোগীদের স্থানান্তরিত করা হয়, সে দিন হাসপাতালের কর্তৃপক্ষকে দুই রোগীর স্থানান্তরের ব্যাপারে জানানো হয়। তবে তা নাকচ করে দেন কর্তৃপক্ষ।’’ হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার গেটে তালা দিয়ে দিতে বলেন বলে দাবি ওই কর্মীর। যদিও এ ব্যাপারে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার সুভাষ মাহাতো বলছেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’