প্রতীকী ছবি
পরিদর্শক দল থেকে শুরু করে করোনা সংক্রান্ত নানা বিষয়ে কেন্দ্র-রাজ্য চাপানউতোর চলছে। থেমে নেই রাজনীতি। থেমে নেই দলবদলও।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, করোনা নিয়ে তিনি রাজনীতি করবেন না। নেহাতই ঘটনাচক্র। তবে মুখ্যমন্ত্রীর ওই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গড়বেতায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন ২৭ জন কর্মী। বিজেপি অভিযোগ তুলল, করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে রাজনীতিতে নেমেছে তৃণমূল। তবে তৃণমূল বিধায়ক আশিস চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে নেই বিজেপি। তাই দল ছাড়ছেন অনেকেই।’’
শাসক দল সূত্রের খবর, গড়বেতা বিধানসভা কেন্দ্রের হুমগড়ে তাদের স্থানীয় এক নেতার বাড়িতে বুধবার সন্ধ্যায় এই দলবদল হয়। দল ছেড়ে আসা বিজেপি কর্মীদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন বিধায়ক আশিস। তিনি বলেন, ‘‘পিয়াশালা অঞ্চলের ২১ জন ও সারবোত অঞ্চলের ৬ জন বিজেপি কর্মী তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এইসব অঞ্চলের আরও অনেক বিজেপি কর্মী তৃণমূলে আসবেন বলে আমাকে জানিয়েছেন।’’ দলবদল করা পিয়াশালা অঞ্চলের চেমিয়া পূর্বপাড়ার বাসিন্দা শ্রীমন্ত লোহার বলেন, ‘‘বিজেপিকে ভাল লাগছিল না। এখন করোনার জন্য অসহায় মানুষদের পাশে নেই তারা। শুধু দলাদলি। তাই দল ছেড়ে তৃণমূলে এসেছি।’’ শিবির বদলে অসিত লোহার বলেন, ‘‘বিজেপির মিটিং, মিছিলে যেতাম, এখন তৃণমূলে যোগ দিয়েছি।’’
দলবদল নিয়ে তৃণমূলকে একহাত নিয়েছে বিজেপি। দলের গোয়ালতোড় উত্তর মণ্ডলের সভাপতি উজ্জ্বল হাটুই বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নিজে যখন বলছেন এইসময় রাজনীতি করবেন না, তখন তাঁর দলেরই বিধায়ক করোনার সময় মানুষের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে রাজনীতি করতে নেমেছেন। করোনার জন্য স্বেচ্ছাসেবক নেওয়ার নাম করে মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে।’’ এই অভিযোগ প্রসঙ্গে আশিসের ব্যাখ্যা, ‘‘এর জন্য তো কোনও সভা, মিছিল, জমায়েত বা মাইকের ব্যবস্থা ছিল না, একজন পার্টি কর্মীর বাড়িতে স্বেচ্ছায় যাঁরা এসেছিলেন তাঁদেরকেই দলে নেওয়া হয়। এটা রাজনীতির কোনও বিষয় নয়। পুরোটাই ঘরোয়া।’’
তৃণমূলের বক্তব্য, করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে নেই বিজেপি। তাই দলবদল। বিজেপি বলছে, করোনার সুযোগ নিচ্ছে শাসকদল। অর্থাৎ অভিযোগ আর পাল্টা অভিযোগেই জুড়ছে করোনা আর রাজনীতি। জুড়ছে দলবদল। যদিও উজ্জ্বলের দাবি, ‘‘যাঁরা গিয়েছেন তাঁরা দলের কেউ সক্রিয় কর্মী নন, সমর্থক হতে পারেন। তৃণমূলের অভিযোগ ঠিক নয়, বিজেপির পক্ষ থেকে এই মণ্ডলের ৪ টি অঞ্চলের ১৬০০ গরিব পরিবারের বাড়িতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে।’’