হকারে ভর্তি দিঘার সৈকত। নিজস্ব চিত্র
বড়দিন থেকে উৎসবের মরসুম শুরু হয়ে গিয়েছে। সামনেই বর্ষবিদায় এবং ইংরেজি নববর্ষ। কিন্তু, পর্যটনের ভরা মরসুমে হকার সমস্যা ঘিরে উত্তপ্ত পর্যটন কেন্দ্র দিঘা।
সৈকতে বা রাস্তাঘাটে পসরা পেতে ব্যবসা করা যাবে না বলে অনেকদিন আগেই নির্দেশিকা জারি করেছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। তা সত্ত্বেও, ওল্ড দিঘায় সৈকত জুড়ে পসরা পেতে ব্যবসা করছেন বহু মানুষ। এর ফলে পিছনে থাকাস্থায়ী দোকানদাররা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই তাঁরাও দোকান ছেড়ে সৈকতে নেমে এসে পসরা সাজিয়ে ব্যবসা শুরু করছেন। আর এতেই পর্যটকেরা সমস্যায় পড়ছেন বলে অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে ওল্ড দিঘাতে বিশ্ববাংলা উদ্যানের কাছে বেশ কিছু স্থায়ী ব্যবসায়ী সিবিচের ধারে পসরা সাজিয়ে বসে পড়েন। তাদের অভিযোগ, তাঁরা দিঘা- শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ কর্তৃক স্টল কিনে ব্যবসা করছেন। অথচ সৈকতে হকারে নিজেদের ইচ্ছে মতো ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। সৈকতের ধারে স্থায়ী দোকানদার এবং হকারদের মধ্যে এই নিয়ে বাদানুবাদও চলে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মঙ্গলবার রাতে সৈকতে ধারে যেতে হয় দিঘা মোহনা থানার পুলিশ। এ ব্যাপারে স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি তপন কুমার পাল বলেছেন,"ব্যাঙের ছাতার মতন গজিয়ে উঠেছে ফুটপাতের ধারে দোকান। আমাদের স্থায়ী দোকানে আর ক্রেতারা কোন জিনিস কিনছেন না। দোকানের উপর নির্ভর করে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই আমরা ডিএসডি এর কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু তাতেও কোন সূরাহা মেলেনি।"
দোকানদারদের দাবি, ২১ ডিসেম্বর হকার উচ্ছেদের দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন ডিএসডিএ কর্তৃপক্ষ। তাঁরা ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন। তারপরেও জট কাটেনি। তাই এবার প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে সৈকতের ধারে পসরা পেতে বিক্রি বাট্টা করবেন স্থায়ী দোকানদাররা। এভাবে দিনের পর দিন চললে অসুবিধা বাড়ছে পর্যটকদের।
পর্যটকের একাংশের অভিযোগ, ""সন্ধ্যা নাগাদ সৈকতের ধারে ঘোরাঘুরি করা বা সেখান থেকে হোটেলে ফেরা খুব মুশকিল। দুদিকে ফুটপাতে এত বেশি অস্থায়ী দোকান তৈরি হয়ে গিয়েছে চোখের পলক পড়তে না পড়তেই হোঁচট খেয়ে পড়ার উপক্রম।"
উৎসবের মরসুমে আগামী কয়েক দিন সৈকত শহরে পর্যটকদের ভিড় আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তার আগে সৈকতে ফুটপাত দখল করে এভাবে অস্থায়ী দোকান গজিয়ে ওঠায় পর্যটকদের সমস্যা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যদিও এ বিষয়ে দিঘা- শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক মানস কুমার মণ্ডল বলেন, "স্থানীয় দোকানদাররা সমস্যার কথা আমাদের জানিয়েছেন। দ্রুত এ বিষয়ে প্রশাসন পদক্ষেপ করবে। তবে পর্যটকদের যাতে সৈকতের ধারে ঘোরাফেরায় কোন অসুবিধা না হয় তার জন্য পুলিশ এবং ডিএসডিএ কর্মীরা নজরদারি চালাচ্ছেন।"