৭৬ আসনের সমবায়ের ভোটে ৬৮টি আসনে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। নিজস্ব চিত্র।
নন্দকুমারে জোরাল আশা জাগিয়েও মহিষাদলে কার্যত ধসে গেল বাম-বিজেপি জোট। রবিবার মহিষাদলের কেশবপুর জালপাই রাধাকৃষ্ণ কৃষি সমবায় সমিতির নির্বাচনে বড়সড় ধাক্কা খেলেন জোটপ্রার্থীরা। ৭৬ আসনের সমবায়ের ভোটে ৬৮টি আসনে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। ৮টি আসনে জিতেছেন বিজেপি ও সিপিআইয়ের জোট প্রার্থীরা।
গত ৯ নভেম্বর নন্দকুমারের ‘বহরমপুর কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড’-এর নির্বাচনে ‘সমবায় বাঁচাও মঞ্চ’ গড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়েছিল বাম-বিজেপি জোট। ৬৩টি আসনের সব ক’টিতেই তৃণমূলকে পরাস্ত করে নজির গড়েছিল তারা। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ‘নন্দকুমার মডেল’-এ লড়াইয়ের বার্তাও দেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। রবিবারের ফলের পর তৃণমূলের কটাক্ষ, সেই নন্দকুমার থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে মহিষাদলে পুরোদস্তুর মুখ থুবড়ে পড়ল বাম-বিজেপি জোট মডেল।
বিজেপির অবশ্য দাবি, এই ফল পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোনও প্রভাব ফেলবে না। দলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা কিসান মঞ্চের সভাপতি বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আজকের ফলাফলে বিজেপি ও বাম জোটের পরাজয় হয়েছে, এ কথা বলা যায় না। ভোটারদের প্রভাবিত করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও বহু আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। একাধিক আসনে ১০-১২ ভোটের ব্যবধানে জিতেছে তৃণমূল।’’ বিজেপি নেতার আরও দাবি, “আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে থাকবে বিজেপি।” তবে বাম-বিজেপি জোট করে নির্বাচনে লড়া হবে কি না, সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
কিন্তু মহিষাদলে কেন এই পরাজয়? অনেকের মতে, ভোটের মুখে তড়িঘড়ি জোট গড়লেও বাম-বিজেপি নেতৃত্বের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ছিল বিস্তর। আসন ভাগ নিয়ে শুরু থেকেই বিভ্রান্তি ছিল। তা ছাড়া, নন্দকুমারে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব সাংগঠনিক দিক থেকে দলকে অনেকটাই দুর্বল করে দিয়েছিল। মহিষাদলে অবশ্য তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তি রয়েছে।
মহিষাদলের তৃণমূল বিধায়ক তিলককুমার চক্রবর্তী বলেন, “রাম-বাম জোট যে অশুভ, তা মানুষকে বোঝাতে পেরেছি আমরা। এরা মানুষের জন্য কাজ করে না। নিজেদের স্বার্থে এই জোট গড়ে তৃণমূলকে উৎখাত করতে চায়। যে বামদের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে, তাদের সঙ্গেই বিজেপি জোট গড়েছে। কিন্তু অশুভ আঁতাতের এই ক্ষমতা দখলের প্রচেষ্টাকে আমরা রুখে দিতে পেরেছি।’’