সোমবার তৃণমূলের মিছিলে সেই ফেস্টুন। নিজস্ব চিত্র।
‘মমতার সাথে মেদিনীপুর’— এই স্লোগান সামনে রেখেই আগামী ৭ ডিসেম্বর দলনেত্রীর সভার প্রচার শুরু করেছে তৃণমূল। শুভেন্দু-পর্বে যার তাৎপর্য গভীর বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের।
মন্ত্রিত্বে ইস্তফার পরে শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে যে দোলাচল তৈরি হয়েছে, তার মধ্যেই মেদিনীপুরে আসছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, শুভেন্দু দলবদল করলে তার বড় প্রভাব পড়বে মেদিনীপুরের তিন জেলাতেই। শুভেন্দুও এখন অরাজনৈতিক কর্মসূচিতে এই তিন জেলায় ছুটে বেড়াচ্ছেন এবং বারবারই নিজেকে অবিভক্ত মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। তাঁর অনুগামীরাও মেদিনীপুরের তিন জেলা জুড়েই সক্রিয়। এই আবহে রাজ্যের শাসক দল বোঝাতে মরিয়া যে, ‘দাদা’ নয়, মেদিনীপুর ‘দিদি’-র সঙ্গেই রয়েছে।
তৃণমূলের দলীয় সূত্রে খবর, দলের সব ব্লক এবং শহর নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে, এখন এই স্লোগান সামনে রেখেই প্রচার চালাতে হবে। কেউ নিজের মতো করে কোনও স্লোগান সামনে আনতে পারবেন না। এই স্লোগান সম্বলিত ফেস্টুন জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়েছে। সেই ফেস্টুনে কর্পোরেট ছোঁয়াও রয়েছে। শোনা যাচ্ছে, এ সবের নেপথ্যে আছে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের দলবল। তারাই না কি প্রচারের মূল সুর বেঁধে দিয়েছে। তৃণমূলের পুরোনো নেতাকর্মীরা মানছেন, এমন জমকালো ফেস্টুন সামনে রেখে দলের জনসভার প্রচার আগে কখনও হয়নি। অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, গত বছর খড়্গপুর বিধানসভা উপ-নির্বাচনের প্রচারে এমন জমকালো ফেস্টুন প্রথম দেখা গিয়েছিল।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘রাজ্য নেতৃত্বের পরামর্শ মতোই জনসভার সমর্থনে প্রচার অভিযান চলছে।’’ দলীয় সূত্রে খবর, রবিবার সন্ধ্যায় এমন জমকালো ফেস্টুন পৌঁছয় জেলায়। ওই দিনই ঠিক হয় যে, সোমবার জেলার প্রতিটি বিধানসভায় ৭ ডিসেম্বরের ‘মেদিনীপুর চলো’-র সমর্থনে মিছিল হবে। সেই মতো জেলার ১৫টি বিধানসভা এলাকাতেই তৃণমূলের মিছিল হয়েছে। মিছিলের সামনে ছিল ওই ফেস্টুনই। অজিত মানছেন, ‘‘খুব কম সময়ের মধ্যে সোমবারের মিছিলের আয়োজন হয়েছে। কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতিই বুঝিয়ে দিয়েছে, মেদিনীপুর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই রয়েছে।’’ ’’
শুভেন্দু মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরেই মেদিনীপুরে ছুটে এসেছেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। তিনিও মমতার আন্দোলনের সঙ্গে মেদিনীপুরের পুরনো যোগ মনে করিয়ে দিয়েছেন। তা ছাড়া, শুভেন্দু পর্বে মমতা সভাও শুরু করছেন মেদিনীরপুর দিয়েই। ফলে, ‘মমতার সাথে মেদিনীপুর’- এই স্লোগানকে সামনে রেখে এক দিকে যেমন শুভেন্দু এবং তাঁর অনুগামীদের বার্তা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে, তেমনই ওই স্লোগানের জোরে জনসভার সমর্থনে প্রচারে ঝড় তুলতে চায় রাজ্যের শাসক দল।