জেলা ও ব্লক কমিটির সদস্য-সহ বিভিন্ন পদে গত প্রায় তিন বছর তেমন বদল ঘটেনি। —প্রতীকী ছবি।
বিধানসভা ভোট লক্ষ্য রেখে পূর্ব মেদিনীপুরে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করতে ব্লক ও জেলা স্তরে পদাধিকারী রদবদলের জন্য তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব পদক্ষেপ শুরু করেছেন।
দলীয় সূত্রের খবর, তমলুক ও কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সাংগঠনিক পদাধিকারীদের রদবদলের পাশাপাশি ব্লক ও পুরসভা এলাকায় দলের পদাধিকারীদেরও রদবদল হবে। এর পরে দুই সাংগঠনিক জেলায় ব্লক স্তরে সাংগঠনিক সভা হবে। চলতি নভেম্বর মাসেই ব্লক ও পুরসভা এলাকায় সাংগঠনিক সভায় দলের কমিটিতে রদবদল হবে। দলের রাজ্য নেতৃত্বের তরফে বর্তমানে জেলা ও ব্লক কমিটির সদস্য-পদাধিকারী হিসেবে থাকা নেতাদের মধ্যে নিষ্ক্রিয়, দুর্নীতিতে অভিযুক্ত, খারাপ ভাবমূর্তিযুক্ত, বিরোধীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলা ‘গদ্দার’ নেতাদের সম্পর্কে রিপোর্ট সংগ্রহ করা হচ্ছে। কাল বুধবারের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের জেলা সভাপতির পদে রদবদল হয়েছিল প্রায় এক বছর আগে, ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে। তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পদ থেকে বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্রকে সরিয়ে নয়া সভাপতি করা হয়েছিল অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়কে। চেয়ারম্যান পদে আনা হয় চিত্তরঞ্জন মাইতিকে। একই ভাবে কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পদে এগরার বিধায়ক তরুণ মাইতিকে সরিয়ে আনা হয়েছিল পীযূষকান্তি পণ্ডাকে, আর জেলা চেয়ারম্যান করা হয়েছিল তরুণ মাইতিকে। তবে দুই সাংগঠনিক জেলায় নতুন করে জেলা কমিটি বা ব্লক কমিটি গঠন করা হয়নি। জেলা ও ব্লক কমিটির সদস্য-সহ বিভিন্ন পদে গত প্রায় তিন বছর তেমন বদলও ঘটেনি।
দলীয় সূত্রের খবর, চলতি বছর লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের জয় হলেও তমলুক ও কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল বিজেপির কাছে হেরেছে। ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে জেলার ১৬ টি বিধানসভার মধ্যে ১৫ টিতে এগিয়ে বিজেপি।এই হারের কারণ বিশ্লেষণের পাশাপাশি দলের একাংশ নেতার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। দলীয় সূত্রের খবর, পরামর্শদাতা সংস্থা ও দলের আন্দরের রিপোর্টের ভিত্তিতে নিস্ক্রিয় ও ভাবমূর্তি খারাপ থাকা নেতৃত্বদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠনের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। দলীয় সূত্রের খবর, হলদিয়া পুরসভা, তমলুক পুরসভা, শহিদ মাতঙ্গিনী, নন্দীগ্রাম-২, নন্দকুমার, হলদিয়া, সুতাহাটা ব্লক-সহ জেলার যে সব ব্লক ও পুরসভা এলাকায় দলের সাংগঠনিক শক্তি দুর্বল, সেখানে নতুন কমিটি গঠনে বিশেষ ভাবে নজর রাখা হচ্ছে।
তৃণমূলের জেলা (তমলুক) সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রদবদলের জন্য প্রক্রিয়া চলছে। সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে কিছুদিনের মধ্যেই ব্লক স্তরে সভা হবে। পরে ধাপে ধাপে পুরসভাতেও সভা হবে।’’ দলীয় সূত্রের খবর, আর জি কর হাসপাতালে ধর্ষণ-খুন- কাণ্ডে রাজ্যের সরকারের বিরুদ্ধে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন ও সাধারণ মানুষ পথে নামার প্রভাব নিয়েও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।