প্রতীকী ছবি।
সামনেই খড়্গপুরে উপ-নির্বাচন। তার আগে রামজীবনপুর পুরসভার দখল নিয়ে ধাক্কা দিতে চেয়েছিল বিজেপি। আপাতত উল্টে গিয়েছে পাশার দান। পুরসভার দখল নিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও তা থেকে সাময়িক ভাবে পিছিয়ে যেতে হচ্ছে গেরুয়া শিবিরকে।
আইনি গেরো। সে জন্যই বিজেপির এই পিছিয়ে আসা। তৃণমূল পরিচালিত রামজীবনপুর পুরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থায় প্রথম পিটিশনার হিসাবে সই করেছিলেন গোবিন্দ মুখোপাধ্যায়। পরে ২৩ সেপ্টেম্বর তলবি সভা ডেকে পুরসভা দখলের দাবিও করেছিলেন বিজেপি কাউন্সিলরেরা। তলবি সভায় কোনও প্রশাসনিক আধিকারিক এবং তৃণমূল কাউন্সিলরের উপস্থিতি ছাড়াই গোবিন্দকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করে গেরুয়া শিবির। এরপর মাঠে নামে তৃণমূল। তৃণমূল বোর্ডের চেয়ারম্যান নির্মল চৌধুরী পুরসভার ফাইল চুরি-সহ নানা অভিযোগে মামলা করেন। অভিযোগের তালিকায় প্রথমেই রাখা হয় গোবিন্দের নাম। সেই মামলায় গোবিন্দ গ্রেফতার হননি বটে তবে তিনি আগাম-জামিন পাননি। এরপর কিছুদিন অপেক্ষা করার পর পুরসভা দখলে হাইকোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গেরুয়া শিবির। কিন্তু সেখানেই দেখা দিয়েছে আইনি জটিলতা। বিজেপির রাজ্য কমিটির এক নেতা মানলেন, “এখন গোবিন্দবাবুর জামিন নেওয়াটা জরুরি। তা না হলে সমস্যা দেখা দিবে। কারণ, অনাস্থায় তিনি সই করেছেন। তাই হাইকোর্টে মামলা হলে তাঁকে সওয়াল করতে হবে। কিন্তু আগাম জামিন না পেলে সেটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’’
গেরুয়া শিবিরের এই পদক্ষেপই উঠছে প্রশ্ন। আইনি জটিলতা সম্পর্কে না জেনেই হাইকোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? স্থানীয় এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘‘আমাদের বুঝতে কিছু ভুল হয়েছিল। রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলার পর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছি।’’ রামজীবনপুর পুরসভা এখনও তৃণমূল চালাচ্ছে। অথচ অনাস্থা প্রস্তাব, তলবি সভার পর আইনি জটিলতায় জড়িয়ে পড়েছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের এই পরিস্থিতি দেখে তৃণমূল জেলা সভাপতি অজিত মাইতির কটাক্ষ, “এই নিয়ে কী আর বলব। ওদের আম ও ছাল দুটোই গিয়েছে। বিজেপি নিজেদের লেজে আগুন দিয়ে নিজেরাই পুড়ছে।” তবে সাময়িক ভাবে পিছু হটলেও বিজেপি যে রামজীবনপুর দখলের আশা ছাড়ছে না, সেটা স্পষ্ট দলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অন্তরা ভট্টাচার্যের কথায়। তাঁর দাবি, “সাময়িক সমস্যা হয়েছে। তবে রামজীবনপুর আমাদের দখলেই আসবে।”
গোবিন্দদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর তদন্তের স্বার্থে তাঁদের ডেকে পাঠিয়েছিল পুলিশ। তলবিসভার দিন ঠিক কী হয়েছিল সে সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। তারপরে অবশ্য আর কোনও পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। জেলা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক অবশ্য বলেন, “আইন মেনে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
খড়্গপুর বিধানসভা উপ-নির্বাচনে আর সপ্তাহ দুয়েক বাকি। তার আগে, শাসকদলের একাংশের কটাক্ষ, রামজীবনপুরে এখনও জীবন খুঁজে পাচ্ছে না বিজেপি।